নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলের কোন পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। বর্তমানে বৃহৎ দলদুটি চলছে দুই সদস্যের কমিটি দিয়ে। গত বছরের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জেলা শাখার সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনের মাধ্যমে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার ছয় মাস পরও কোনো দলই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি।
দুই দলের জেলা পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, সম্মেলনের দীর্ঘদিন পরেও কমিটি গঠন করা হয়নি। তাই তাঁদের এখন জেলা কমিটির সাবেক নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে হচ্ছে। তাঁরা দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার আহ্বান জানান।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, দীর্ঘ ৮ বছরের বেশি সময় পর গত ৭ নভেম্বর দলের জেলা শাখার সম্মেলন হয়। টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সম্মেলন প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে সভাপতি পদে ফজলুর রহমান খান ফারুক এবং সাধারণ সম্পাদক পদে টাঙ্গাইল-৮ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের এমপি)র নাম ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ও টাঙ্গাইল-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন বলে দলীয় সূত্র জানায়। সে অনুযায়ী গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের বাসভবনে তাঁরা বৈঠক করেন। সেখানে একটি খসড়া কমিটি তৈরি করা হয়। কিন্তু খসড়া কমিটির বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় বিভিন্ন স্তরের নেতাদের মধ্যে। সেই খসড়া কমিটি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়ে গেছে। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে দেশের বাইরে গেছেন। তিনি ফিরলেই তাঁকে দেখিয়ে কমিটি অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির কর্মীরা বলেন, গত বছর ১ নভেম্বর জেলা পর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শহরতলির পশ্চিম আকুরটাকুর পাড়া ঈদগাহ মাঠে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে হাসানুজ্জামিল শাহীন ও এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল। তারপর প্রায় ছয় মাস কেটে গেলেও আজো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।
জেলা বিএনপি সূত্র জানায়, সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের অনুসারী। কাউন্সিলরদের ভোটে তাঁরা যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অনুসারীদের হারিয়ে দেন। এখন সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অনুসারীরা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে গিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পরাজিত হওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইছেন।
জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার ছাইদুল হক ছাদু বলেন, দীর্ঘদিন পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এ বিষয়ে তিনিসহ অনেক নেতা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। সবাইকে নিয়ে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির খসড়া করা হয়েছে। শীঘ্রই এ কমিটি ঘোষণা করা হবে।