নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে প্রচণ্ড তাপদাহ আর ঘনঘন লোডশেডিংয়ে অসুস্থতা বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। প্রচণ্ড গরমের কারণে ঘাম শরীরে শুকিয়ে গিয়ে তাদের ঠাণ্ডা লেগে যাচ্ছে। ফলে মানুষের সর্দি, জ্বর, ডায়রিয়া এবং কাশির মতো রোগ বাড়ছে। এছাড়াও হাসপাতালে থাকা রোগীদেরও অতিরিক্ত গরমে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
জানা যায়, টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালত পাড়া এলাকার ছয় বছরের শিশু তাকিয়া লুনা (৪) মঙ্গলবার থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার ঠাণ্ডা এবং জ্বর হয়েছে। জ্বরের সঙ্গে তার পুরো শরীরে ব্যথা। তার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে জ্বরের ওষুধ খাওয়াচ্ছে। লুনার মতো ঘরে ঘরে বহু শিশু ঠাণ্ডা ও জ্বরে অসুস্থ হচ্ছে।
আরও জানা যায়, এই গরমে শুধু জ্বরই না। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ঘামাচি, সর্দির মতো অসুখেও ভোগাচ্ছে মানুষদের। এছাড়াও স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই গরমে শিশুর বেশি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানায়, লোডশেডিংয়ের কারণে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়া প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে অপারেশন থিয়েটারে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।
জুয়েল রানা (১১) নামে এক শিশুর অভিভাবক জানান, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ঘরে ঘরে শিশু ও বয়স্করা গরমে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তিন বছরের ছেলে জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে। দিনে চার থেকে পাঁচবার বিদ্যুৎ চলে যায়। আবার রাতের বেলাও বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে শিশুরা ঘেমে ঠাণ্ডা লেগে গেছে।
কলেজ ছাত্র আবু সাঈদ বলেন, প্রচন্ড গরমের কারণে আমার ঠান্ডা লেগে গেছে। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ঘনঘন চলে যায়। আবার রাতেও বিদ্যুৎ চলে। সামনে পরীক্ষা একদিকে গরম আবার আরেক দিকে বিদ্যুৎ থাকে না। ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পাচ্ছি না।
চিকিৎসকরা বলেন, অতিরিক্ত গরমে ঘেমে শিশুরা পানিশুন্যতায় ভুগতে পারে। শিশুদের প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে। জ্বর, বমি, ডায়রিয়ার আশঙ্কা থাকে। চামড়ায় ঘামাচি হয়। বেশি সময় ডায়াপার পরে থাকলেও এ সমস্যা হতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বলে তাপমাত্রার সমস্যার কারণে বেশি আক্রান্ত হয়। বিদ্যুৎ না থাকলে শিশুরা গরমে ঘামতে থাকে। গরম ও ঠান্ডা লেগে তারা বেশি অসুস্থ হয়। এজন্য ঘরে বিকল্প হিসেবে শিশুদের হাতপাখা দিয়ে বাতাস করা বা ঘরের বাইরে বাতাস আছে এমন স্থানে নিয়ে বসানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, শিশুরা খুব বেশি স্পর্শকাতর বলে অনেকে গরম আবহাওয়ায় সহজে খাপ খাওয়াতে পারে না। ফলে জ্বর, পেট খারাপ, সর্দি, কাশিসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। এ কারণে গরমে ছোটদের বিশেষ যত্ন নেওয়া খুবই প্রয়োজন। তাই শিশুদের পানি ও স্বাভাবিক খাবার খাওয়াতে তিনি পরামর্শ দেন।