মির্জাপুর প্রতিনিধি: সারা জেলার ন্যায় মির্জাপুর উপজেলাতেও লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়া ছাড়াও অতিষ্ঠ জনজীবন। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে বলে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস জানিয়েছে।
একদিকে প্রচন্ড গরম অপরদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং। পল্লী বিদ্যুৎ মির্জাপুর ও গোড়াই জোনাল অফিসের আওতাধীন ১ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহক ছাড়াও ছোট বড় চার শতাধিক শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব শিল্পকারখায় তিন লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। সম্প্রতি চলছে মির্জাপুরে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে জনপদ জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের সঙ্গে প্রাণিকূলের অবস্থাও ওষ্ঠাগত।
মির্জাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার পাল জানান, উপজেলায় গত কয়েক দিন সর্বোচ্চ ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করেছে। আজ বাতাস বইলেও রোদের দাবদাহ একই রয়েছে। এতে বোরো আবাদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, আগামী দুই একদিনের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে ফলনের ক্ষতি হবে না বলে তিনি জানান।
বিদ্যুৎ সঞ্চালন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের মির্জাপুর ও গোড়াই দুটি জোনাল অফিস রয়েছে। মির্জাপুর জোনাল অফিসের আওতাধীন কয়েকটি শিল্পকারখানাসহ প্রায় ৯০ হাজার এবং গোড়াই জোনাল অফিসের আওতায় প্রায় ৪৫০টি ছোট বড় শিল্পকারখানাসহ ৭০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। মির্জাপুরে ৬০ মেগাওয়াট ও গোড়াইতে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে গড়ে মির্জাপুরে ৩০ ও গোড়াইতে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।
বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ ধরে গড়ে প্রতিদিন ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল পৌনে আটটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৩৩ কেভি মেইন লাইনে সাড়ে ৩ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে বলে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুুৎ অফিস সূত্র জানায়। ভয়াবহ এই লোডশেডিংয়ে জেলার একমাত্র শিল্পাঞ্চল খ্যাত উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চলের মিল কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া এই গরমে শিশুরা সর্দি-কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোড়াই শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু জানান, তার এলাকাতেও প্রতিদিন ৪/৫ বার লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবার দেড় দুই ঘন্টা করে বিদ্যুৎ থাকছে না।
পল্লীবিদ্যুৎ মির্জাপুর অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আল মামুন বলেন, তার অফিসের আওতায় ৯০ হাজার গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে ৩০ মেগাওয়াট। কোন কোন সময় বিদ্যুৎ আরো কম সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে লোডশেডিং কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
পল্লীবিদ্যুৎ গোড়াই অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, একটি পাওয়ার প্ল্যান্টে সমস্যা হয়েছে। তাছাড়া প্রচন্ড দাবদাহে সারাদেশে লোড বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সর্বোচ্চ লোড চলছে। তার অফিসের আওতায় ছোট বড় মিলে ৪৫০ শিল্পকারখানাসহ প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদা ৪০ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে কম। এতে করে লোডশেডিং হচ্ছে।