সখীপুর প্রতিনিধি: সখীপুরে লোডশেডিং, বিদ্যুৎবিভ্রাট ও লো-ভোল্টেজে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানখেতের সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক। একদিকে গ্রীষ্মের দাবদাহ অন্যদিকে মাঠে সেচ নির্ভর প্রধান ফসল বোরো ধানে সেচ দেওয়া নিয়ে ভোগান্তি। স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও গ্রাম পর্যায়ে নাজেহাল অবস্থা। অধিকাংশ সময়েই চলে লোডশেডিং।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, তীব্র গরমে ধানের ব্লাস্ট রোগ (ছত্রাক) থেকে রক্ষা পেতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে জমিতে পানি ধরে রাখতে হবে। এর জন্য প্রচুর সেচের প্রয়োজন। তবে কৃষকেরা বলছেন, পানির পাম্প চলছে না, বিদ্যুতের ঘনঘন আসা-যাওয়ায় সেচ মেশিন চালু করা যাচ্ছে না। কিছু সময় বিদ্যুৎ এসে স্থির থাকলেও কম ভোল্টেজের কারণে সেচের মোটর ঘোরে না, পানিও ওঠে না। এ অবস্থা বেশি দিন থাকলে ধান রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
উপজেলার বোয়ালী গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক শাহাদাত আজিজ বলেন, রমজান মাসের শুরু থেকেই আমরা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়েছি। এমনকি সাহরি ও ইফতারের সময়ও নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হতে হচ্ছে। এতে বাসার ফ্রিজ, টিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার প্রতিমা বংকী গ্রামের আসিবুল হক ও কৃষক সিরাজুল জানান, দিনে গড়ে ১৫-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকতে হচ্ছে। বিদ্যুতের এই বেহাল অবস্থার কথা একাধিকবার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি।
এ ছাড়া উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার পোলট্রি খামারি বিদ্যুৎবিভ্রাটের কবলে পড়েছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় অত্যধিক গরমে শত শত পোলট্রি মুরগি মারা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে পিডিবির (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) সখীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর তালুকদার বলেন, চাহিদার তুলনায় অনেক কম মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ পাচ্ছি। অতিরিক্ত লোড দিলেই সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত কৃষক ভাইদের অভিযোগ পাচ্ছি। ব্যক্তিগতভাবে নিজেরও খারাপ লাগে, কিন্তু পেশাগতভাবে আমার বিদ্যুৎ বরাদ্দের সীমা অতিক্রম করলেই লাইন বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া ভোল্টেজের আপ-ডাউনের বিষয়টি আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, এটি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আশা করছি দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।