সখীপুর প্রতিনিধি: সখীপুর উপজেলার ঘোনারচলা উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির তিনজন কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী ও নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীরা। এ ঘটনায় গত বুধবার দুপুরে বিদ্যালয় ভবনের সামনে তাঁরা প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এর আগে নিয়োগ বঞ্চিতরা জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে নতুন নিয়োগ কমিটি গঠনেরও আবেদন করেন।
মানববন্ধনে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ প্রত্যাশী জুয়েল রানা বলেন, গত ২৩ মার্চ বেলা ১১টায় অফিস সহায়ক, আয়া ও নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা তালবাহানায় ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় পরীক্ষা নিয়ে আগে থেকেই নির্ধারিত নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
জুয়েল রানা অভিযোগ করেন, ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য অফিস সহায়ক পদের জন্য আমার কাছে ৮ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। আমি টাকা দেওয়ার পক্ষে ছিলাম না, আমার পূর্ণ বিশ্বাস ছিল সুষ্ঠু পরীক্ষা হলে মেধার ভিত্তিতেই আমার চাকরি হবে। কিন্তু কমিটির লোকজন টাকার বিনিময়ে তাঁদের নির্ধারিত প্রার্থীদের চাকরি দিয়েছেন।
ওই বিদ্যালয়ের আয়া পদে আবেদনকারী নিলুফা ইয়াসমিনের স্বামী ফরিদ হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল কাদের মর্ত্তুজাসহ কমিটির কয়েকজনের সঙ্গে আমার স্ত্রীর চাকরির জন্য ৮ লাখ টাকার কম-বেশি করা নিয়ে দর কষাকষি হয়েছে। পরীক্ষার দিন আমি বুঝতে পেরেছিলাম আমার স্ত্রীর চাকরি হবে না। তাই আমি স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। পরে স্কুল থেকে মোটরসাইকেল দিয়ে আমার স্ত্রীকে ডেকে এনে পরীক্ষা নিয়েছে। কিন্তু তারা আগে থেকেই টাকা নিয়ে পছন্দের প্রার্থীকেই নিয়োগ দিয়েছে।
নৈশপ্রহরী পদের ফারুক হোসেন দাবি করেন, প্রধান শিক্ষক কাদের মর্ত্তুজা স্যার আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক বছর আগে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। নিয়োগ পরীক্ষার দিনও আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। পরে অবশ্য চাকরি না হওয়ায় আমার টাকা ফেরত দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল কাদের মর্ত্তুজা তাঁর ও কমিটির বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওরা বৈধভাবে নিয়োগ না পেয়ে নানাভাবে আমার এবং বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি বা অর্থের লেনদেন হয়নি।
সখীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঝিল্লুর রহমান আনম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বুধবার ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছি। আগামী দুই-চার দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে।