ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুর থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ৩৪টি দোকানঘর নির্মাণ করে থানা চত্বরকে অনিরাপদ করার পর আবারও একই কাজ করছেন। এবার থানার ভেতরে দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থানার কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয়রা এতে নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে সমালোচনা করছেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালে ভূঞাপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন থানার পশ্চিমপাশে মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এরপর ওসি কাউসার চৌধুরী থাকাকালীন থানার সামনে সড়ক ও জনপদের জায়গা নিয়ে থানার গাছ কেটে ও ড্রেন ভেঙে প্রায় ৩৪টি দোকান ঘর করে মার্কেট নির্মাণ করে। পরে সেই মার্কেটগুলোর কক্ষ বিপুল টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এরপর থানার সাবেক ওসি কাউসার অন্যত্র বদলি হওয়ার পর রাশিদুল ইসলাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তিতে তিনিও থানা গেটে আরও ২টি দোকান ঘর নির্মাণ করেন। এতে থানার দিক-নির্দেশক নাম ফলক ওই দোকান ঘরের সামনে পড়ে যায়। এছাড়াও থানার ভিতরে সেলুট ডায়াস (সম্মান মঞ্চ) স্থানে একটি পাঁকা দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় এক সপ্তাহ ধরে ভূঞাপুর থানা ভবনের ২০-২২ ফুট দূরে বর্তমান থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম নতুন করে আগের মার্কেটের পেছনেই একটি পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। এটাও বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে এক ঔষধ দোকানীর কাছে ভাড়া দেয়া হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
স্থানীয় ও পথচারীরা জানান, কয়েক বছর আগে থানা চত্বরের পুরাতন গাছপালা কেটে থানা মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। থানার ভেতরে এসব মার্কেটে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে। যত্রতত্র থানার ভেতরে মার্কেট নির্মাণে থানাটি দিনদিন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। এখন আবার দেখছি ফের দোকান নির্মাণ করছেন থানা কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, রাশেদ মেডিকেলের মালিকের অনেক টাকা। তাই টাকা খরচ করেই থানার ভিতরে দোকান নির্মাণ করছে। এতে থানার ওসি তাকে সহযোগিতা করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার এক কর্মকর্তা জানান, ওসির ব্যক্তিগত লাভ ছাড়া থানার ভিতরে এভাবে অপরিকল্পিতভাবে দোকান তোলা সম্ভব নয়। এতে থানার চিত্র পাল্টানোসহ জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। এতে থানাও অনিরাপদ।
ভূঞাপুর বাজার সমবায় উন্নয়ন মার্কেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক আরজু বলেন, যে ওসির সাথে যার ভাব জমে তাকে সিস্টেম করে দোকান নির্মাণ করে দিয়ে যান। তবে অরক্ষিত করে থানার ভিতর এভাবে দোকান নির্মাণ করা ঠিক হচ্ছে না।
ভূঞাপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সুকমল রায় বলেন, আইন অনুযায়ী পৌরসভার মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে পৌরসভা কর্তৃক অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ সেটি মানছেন না। তারা ইচ্ছে মত ভবন নির্মাণ করছেন। আমাদেরকে অবহিতও করে না।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। তাছাড়া থানার ভিতর এটা সংস্কারের অংশ।