নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে ওই কিশোরী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলাটি করেছে। ধর্ষণের ঘটনায় কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমানকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য আজ বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, রাজনৈতিকভাবে তাঁকে হেয় করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে ওই কিশোরী উল্লেখ করেছে, তিনি তাঁর আত্মীয় ও পূর্বপরিচিত। হোয়াটসঅ্যাপে তাঁদের দুজনের যোগাযোগ ছিল। সম্প্রতি পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের বিষয়টি তাকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর গোলাম কিবরিয়া শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি ভবনে ওই কিশোরীকে ডেকে নেন। সেখানে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে তাকে ধর্ষণ করে তার আপত্তিকর ছবি তুলে রাখা হয়। বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য তাকে ভয়ভীতি দেখান। আপত্তিকর ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে ওই কিশোরী মামলায় অভিযোগ করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি তাকে জানার পর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে ওই কিশোরী রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত আটটার দিকে অভিযুক্ত নেতা ওই কিশোরী তুলে নিয়ে আদালত পাড়ার একটি বাড়িতে যান। সেখানে একটি কক্ষে ওই কিশোরীকে তালাবদ্ধ করে রেখে আবার ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পর তাঁর স্ত্রী নিগার আফতাব ওই কিশোরীকে মারধর করেন। পরে দিবাগত রাত তিনটার ওই কিশোরীকে বাড়িতে রেখে আসা হয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকার জন্য মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে ওই কিশোরী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে মেয়েটিকে ধর্ষণে কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তবে সোয়াপ টেস্ট পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় গাইনি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট লুৎফুন্নাহারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ড ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা করবে। তবে মেয়েটি অন্ত:সত্ত্বা বলে প্রাথমিক নিশ্চিত হওয়া গেছে।