মাভাবিপ্রবির ৩য় সমাবর্তন অব্যবস্থাপনা, ক্ষোভ ও হতাশায় সমাপ্তি!

টাঙ্গাইল সদর শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় সমাবর্তনের প্যান্ডেলে শিক্ষার্থীদের বসার সিট না পাওয়া, খাবার না পাওয়া, শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক ড. সঞ্জয় কুমার সাহা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, বৈষম্যমূলক পদক প্রদানসহ নানা অব্যস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে ৩য় সমাবর্তনকে ঘিরে। এতে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নেয়া বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।

গত শনিবার ৩য় সমাবর্তন ২০২৩-এর বৈষম্যমূলক পদক প্রদান নীতিমালা বাতিল পূর্বক পূর্বের নিয়ম বহাল রাখার জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ। অবস্থান কর্মসূচিতে প্রতিবাদকারীরা নতুন নিয়ম বাতিল করে পূর্বের নিয়মানুযায়ী ৩য় সমাবর্তনে ডিন’স লিস্ট ও ডিন’স অ্যাওয়ার্ড এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সকল পদক প্রদানের দাবী জানায়।

উল্লেখ্য, পদক প্রদানে সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে নতুন নিয়মে ৩.৮০ স্থলে উপাচার্য পদক ৩.৯৬ ও আচার্য পদক ৩.৯৮ করা হয়। রবিবার সমাবর্তন অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে রেজিষ্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থীরা বসার জায়গা না পেয়ে প্রতিবাদ জানায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সাথে পদক বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বাক-বিতণ্ডা হয়। এছাড়া, অনেক পদক বঞ্চিত শিক্ষার্থী সমাবর্তন বর্জন করেছেন বলে জানান।

সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান শেষে রেজিষ্ট্রেশনকৃত ২টি বিভাগ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিকাল ৪টায় খাবার পায়। এছাড়া সময়মত খাবার না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী খাবার না নিয়েই মা-বাবা- অভিভাবকের সাথে চলে যায়। খাবার নিয়েও অভিযোগ ও বিশৃঙ্খলার খবর জানা যায়। অভিযোগ ওঠে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের খাবার দেয়া হয়, আর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থীদের পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্যান্য অতিথিদের জন্য বরাদ্দকৃত নিম্নমানের খাবার দেয়া হয়।

এ সকল বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ ফরহাদ হোসেনের প্রায় ঘন্টাব্যাপী বাক-বিতন্ডা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বয়কট করে সমাবর্তন প্যান্ডেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে। প্রায় ১.৫ ঘন্টা শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈঠকের পর বিদ্যুৎ সংযোগ সচল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, আমার টাকায় আমার সমাবর্তন, এখানে মা-বাবাকে ডেকে এনে বসার সিট ও খাবার না দিয়ে অপমান করার অধিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কে দিয়েছে?

এদিকে সমাবর্তনে পদক দেয়া বিষয়ে গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনা চলে না। দেখা গেল, পদক পাওয়া সেই শিক্ষার্থী চাকরি পেল না। তখন এটি নিয়ে আরও বেশি সমালোচনা হব।’ অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সাহার দেয়া এমন বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ নিয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *