কালিহাতী প্রতিনিধি: উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত কালিহাতীর এলেঙ্গা এলাকায় যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এলেঙ্গা রিসোর্ট বকেয়া ভাড়ার কারণে কালিহাতী উপজেল প্রশাসন সিলগালা করেছে।
বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর দুপুর ১২টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রিসোর্টটি সিলগালা করা হয়।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এলেঙ্গা রিসোর্টটি যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের জায়গা ভাড়া নিয়ে পরিচালিত হচ্ছিল। তবে বেশ কয়েক মাসের ভাড়া পরিশোধ না করায় কর্তৃপক্ষ একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরও কোনো সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে রিসোর্টটিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, এলেঙ্গা রিসোর্টের কাছে ৩০ মাসের ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ভাড়া বকেয়া রয়েছে।
সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর পাভেল জানান, আমাদের স্টেট ডিপার্টমেন্ট দীর্ঘদিন তারা ভাড়া দেয়নি। এ বিষয়ে বড় ধরনের একটা অডিট আপত্তি হয়েছে। তাহার প্রেক্ষিতে অফিসের নির্দেশনায় আমরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে এলেঙ্গা রিসোর্ট সিলগালা করে দিচ্ছি।
কালিহাতী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েদা খানম লিজা জানান, এলেঙ্গা রিসোর্টটি মূলত বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন জমিতে প্রতিষ্ঠিত। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রিসোর্ট পরিচালনার উদ্দেশ্যে জমিটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার বকেয়া ইজারার অর্থ পরিশোধ না করায় সেতু কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি ও নোটিশ প্রদান করলেও তারা কোন সাড়া দেননি। যার কারণে আজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরে মালিকানা অনুযায়ী সেতু কর্তৃপক্ষ তাদের জায়গার দখল বুঝে নেয় বলে জানান নির্বাহী হাকিম।
রিসোর্টে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী জানান, এখানে আমরা ৫৪ জন লোক কাজ করি। আমাদের প্রায় ছয় মাসের বেতন বাকি। হঠাৎ করে রিসোর্ট বন্ধ হবে এটা আমরা কেউই জানতাম না। এখন বাড়ি যাবো আমাদের কাছে কোন টাকা পয়সা নাই। আমরা বেতনের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়াবো। এখানকার মালিক বিদেশে থাকেন। তাকে আমরা পাই না, এখন কে আমাদের দাবি পূরণ করবে।
এদিকে, এলেঙ্গা উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হওয়ায় এলাকায় বহু পর্যটক ও যাত্রী অবস্থান করায় এই রিসোর্টটি ছিল বেশ পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান। তবে মালিকপক্ষের বকেয়া পরিশোধ না করায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।