নিজস্ব প্রতিবেদক: মওলানা ভাসানীর আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলে মন্তব্য করেছেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, মওলানা ভাসানী শুধু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের একজন রাজনৈতিক পুরুষ ছিলেন। ভাসানীর রাজনীতি শুরু হয়েছিল আসামে। সেই আসামে তিনি বাঙালি মুসলিম কৃষকদের অধিকার ও তাদের ভূমি অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন। সেই লড়াই এখন পর্যন্ত আসামের বাঙালি মুসলমান ও হিন্দুদের লড়তে হয়। সেখানে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে পরিচিত হতে হয়। মওলানা ভাসানী প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রথম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীদের বিদায় ঘোষণা করেছিলেন কাগমারী আন্দোলনের মাধ্যমে।
মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই দুপুরে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্ত্বরে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা এই সমাবেশে মওলানা ভাসানীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে চাই। মওলানা ভাসানীকে ইতিহাসে স্মরণ করা হয় না। ভাসানীর মতো মহান রাজনৈতিক পুরুষ, বাংলাদেশের স্থপতি থাকা সত্ত্বেও শুধু একজনকে জাতির পিতা ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৫৪ বছরে একজন ব্যক্তিকে পূজা করা হয়েছে। কিন্ত ভাসানী না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতে পারতেন না। বাংলাদেশে শুধু একজন জাতির পিতা নন, অনেকগুলো জাতির পিতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম রয়েছেন মওলানা ভাসানী। মওলানা ভাসানী কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি গণমানুষের জন্য লড়াই করেছিলেন। আমরা মওলানা ভাসানীর সেই আদর্শকে ধারণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায়।
টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নামে জিআই পণ্যের স্বীকৃতির কড়া সমালোচনা করে বলেন, তাঁত শিল্পকে পূণরুদ্ধার করতে হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশের খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে আমরা কৃষকদের সংগঠিত করতে চাই।
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, গণঅভ্যুথানে টাঙ্গাইলে ৯ জন শহীদ হয়েছেন। আমরা সে সব শহীদদের ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবো।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক নাহিদা সারওয়ার, মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাইফুল্লাহ হায়দার, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলীক মৃ, সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) আজাদ খান ভাসানী, কেন্দ্রীয় সদস্য মেজর (অব.) সালাহউদ্দিন, জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পদযাত্রার আগে সকালে শহরের একটি হোটেলে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা জুলাই আন্দোলনে টাঙ্গাইলের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে তারা টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজের সামনে থেকে পদযাত্রা নিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশস্থল শহীদ মিনার চত্বরে আসেন।
এ দিকে যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সমাবেশস্থলসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে দায়িত্ব পালন করেন। শহরের কেন্দ্রস্থল নিরালা মোড়ে এনসিপির সমাবেশের কারণে সকাল থেকেই ভিক্টোরিয়া সড়ক, কবি নজরুল সরণি ও মেইন রোডের কিছু অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে শহরের অন্যান্য সড়কেও যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে শহরবাসী।