নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট না থাকায় চিকিৎসা সেবা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নতুন আক্রান্ত রোগীরা। আক্রান্ত হওয়ার তথ্য না জানাসহ চিকিৎসা সেবা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন জেলার প্রায় ৪২ লাখ মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, রোগী শনাক্ত করতে না পারলে এ সংক্রমণ ফের মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। আর চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা পরীক্ষার কিটের চাহিদা দেওয়ার পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।
জানা যায়, মে মাসে দেশে নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তবে জেলার হাসপাতালগুলোতে জ্বর, ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা রোগীরা পরীক্ষা করাতে না পারায় করোনার চিকিৎসা নিতে পারছেন না। ফলে মহামারির শঙ্কা করছেন জেলার সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত টাঙ্গাইলে ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এসব রোগীর মধ্যে ২৫০ জনের মতো মৃত্যুবরণ করে। ২০২১ সালের ২ মে করোনায় আক্রান্তদের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিট চালু করা হলেও জনবল সংকটে তা প্রায় ৩ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। অযত্ন-অবহেলা আর ধুলাবালুর আস্তরে বেডসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ, টাঙ্গাইল মেডিকেল ও জেনারেল হাসপাতালের সমন্বয়ে পুনরায় আইসিইউ ইউনিট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, যে ট্রমা সেন্টারে আইসিইউ ইউনিট চালু করা হবে তাও অগোছালো রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইলে চিকিৎসা সেবা চালু না হওয়ায় শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। অনেকেই পরীক্ষা করানোর আগ্রহ থাকলেও কিট না থাকায় তা পারছেন না। করোনা পরীক্ষার কিট, আইসিইউ ইউনিট চালু ও আক্রান্তদের বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করা খুবই জরুরী।
শহিদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক বলেন, ঢাকার খুব কাছের জেলা টাঙ্গাইল। এখানে যদি করোনা পরীক্ষার কিট না থাকে, তাহলে অন্য জেলার কি অবস্থা হবে। তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে করোনার জন্য আইসিইউ ইউনিট চালু হলে সেটিও বন্ধ রয়েছে। রোগী শনাক্ত করতে না পারলে দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়বে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখনই সময় করোনা প্রতিরোধ করার। সেখানে যদি শনাক্ত করাই না যায়, তাহলে কিভাবে সচেতন করা সম্ভব হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে শহরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করতে হবে।
আইনজীবী আব্দুল মালেক বলেন, ভৌগলিক দিক থেকে দেশের মধ্যাঞ্চল টাঙ্গাইলে প্রায় ৪২ লাখ মানুষের বসবাস। সেখানে করোনা পরীক্ষার কিটসহ চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু না থাকা দুঃখজনক। করোনা সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিরোধে জনসচেতনার জন্য মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করতে হবে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, করোনা পরীক্ষার কিট না থাকায় রোগী শনাক্ত সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও চিকিৎসার বিভিন্ন সরঞ্জামও সার্ভিসিং এর চেষ্টা চলছে।
সিভিল সার্জন ডা. এফ এম মাহবুবুল আলম বলেন, করোনা প্রতিরোধে একাধিক সভা করে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। করোনার পরীক্ষার জন্য ১৯ হাজার ৫৫০টি কিটের চাহিদা পাঠানো আছে। পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে ৫টি করে করোনা বেড প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। অপরদিকে আইসিইউ চালুরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।