আইপিএলে নজরকাড়া পারফরম্যান্স ও বৈচিত্রময় বোলিং দিয়ে ভারতীয় দলে জায়গা করে নেন বরুণ চক্রবর্তী। জাতীয় দলের জার্সিতেও বাজিমাত এই স্পিনারের। সদ্য শেষ হওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও তিন ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে ভারতের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন।
অথচ এই বরুণকেই ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। এমনকি দেশে না ফেরার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল, লোকেদের ভয়ে বাড়িতে লুকিয়েও থাকতে হয় তাকে। আইপিএলে পারফরম্যান্সের সুবাদে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলে জায়গা পান বরুণ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত টুর্নামেন্টে তিন ম্যাচ খেলে (পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড) উইকেটশূন্য থাকেন তিনি।
ওই আসরে ভালো করতে পারেনি ভারত।পাঁচ ম্যাচের দুটিতে হেরে তারা বিদায় নেয় সুপার টুয়েলভ পর্ব থেকে। হতাশাজনক ওই আসরের পর কীভাবে ফোনে হুমকি পেতেন, চার বছর আগের সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা শুক্রবার এক ইউটিউব চ্যানেলে আলাপচারিতায় তুলে ধরলেন ৩৩ বছর বয়সী ক্রিকেটার। ‘২০২১ (টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপের পর আমি ফোনে হুমকি পেয়েছিলাম।
“ভারতে এসো না। যদি চেষ্টা করো, পারবে না তুমি।” লোকেরা আমার বাড়ির কাছে এসে আমাকে খুঁজে বের করত এবং মাঝেমধ্যে আমাকে লুকিয়ে থাকতে হতো। যখন আমি বিমানবন্দর থেকে ফিরছিলাম, তখন কিছু লোক তাদের বাইকে আমার পিছনে পিছনে আসছিল।’পেছন ফিরে তাকিয়ে ৩৩ বছর বয়সী বরুণ আরো বলেন, ‘আমার জন্য খুব কঠিন সময় ছিল ওটা। আমি অবসাদে ভুগছিলাম, কারণ আমার মনে হয়েছিল, অনেক আলোড়ন তুলে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার পর নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারিনি আমি। একটি উইকেটও না পাওয়ায় আমি অনুতপ্ত ছিলাম।
এরপর তিন বছর আমাকে দলে ডাকা হয়নি। তাই আমার মনে হয়, দলে ফেরাটা অভিষেকের পথচলার চেয়েও কঠিন ছিল।’ ২০২৪ আইপিএলে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২১ উইকেট নিয়ে কলকাতার শিরোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন বরুণ। এ ছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে গেল অক্টোবরে বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে জাতীয় দলে ফেরেন এই স্পিনার। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে নিয়মিত হয়ে পরবর্তী ১২ ম্যাচে ৩১ উইকেট নেন তিনি। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন দুইবার।
এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ঠিক আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ওয়ানডে অভিষেক হয় তার। এরপর যশস্বী জয়সওয়ালের চোটে ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে নেওয়া হয় বরুণকে। প্রথম দুই ম্যাচের দলে তাকে রাখেনি ভারত। তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়েই ৫ উইকেট শিকার করেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। পরে সেমিফাইনাল ও ফাইনালে উইকেট শিকার করেন দুটি করে। পেলেন প্রথম আইসিসি ট্রফি জয়ের স্বাদ।