প্রসঙ্গটি তুলতেই আগে খুব এক চোট হেসে নিলেন ফারুক আহমেদ। সময় নিয়ে হাসা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেললেন যেন,‘এটি একটি ভালো দিক যে লাহোরে এসে আফ্রিদির সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।’ দেখা না হলেও বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি চিটাগং কিংসের মেন্টর হিসেবে চুক্তির বেশির ভাগ অর্থ বুঝে না পাওয়া শহীদ আফ্রিদির কাছ থেকে ই-মেইল পাওয়ার ঘটনা ঠিকই পিছু নিয়ে আছে ফারুকের। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার অভিযোগ জানালেও চুক্তির কপি পাঠাননি বলে বিসিবি সভাপতি এখনো কিছুটা অন্ধকারে।
তবে চুক্তিতে যা-ই থাকুক, এখানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসনের তেমন কিছু করার দেখছেন না ফারুক। কেন, পিসিবি সভাপতি মহসিন নাকভির আমন্ত্রণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দ্বিতীয় সেমিফাইনাল দেখতে লাহোরে এসে সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘বোর্ডের দিক থেকে আমরা কোনোভাবেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। (বিপিএলে) ফ্র্যাঞ্চাইজি, বোর্ড আর খেলোয়াড়ের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় একটি চুক্তি থাকে। তবে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর কোন দল কাকে আনছে, সেটি সম্পূর্ণ তাঁদের ব্যাপার।
তবে এটি সত্যি যে আফ্রিদির মতো কেউ যদি এমন মন্তব্য করেন এবং কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে তাঁর এ রকম কোনো সমস্যা হয়, তাহলে সেটি পুরো দেশের ওপরই আসে।’ আফ্রিদির সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আইনি পথও খোলা দেখছেন না ফারুক, ‘আফ্রিদির ক্ষেত্রে আমরা শুধু অনুরোধ করতে পারি (ফ্র্যাঞ্চাইজিকে)। কারণ এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। কিসের ভিত্তিতে আমরা বলব?’ এই ঘটনায় অবশ্য ভবিষ্যতে ফ্র্যাঞ্চাইজি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরো বেশি সতর্কতার দাবি শুনতে পাচ্ছেন বিসিবি সভাপতি। যদিও এখানে তাঁর আসা ভিন্ন কারণে। জুলাই-আগস্টে পাকিস্তানকে বাংলাদেশে আতিথ্য দেওয়ার একটি ‘উইন্ডো’ খুলেছে দুই দেশের বোর্ড। সেটিরই সূচি চূড়ান্ত করতে এসে ফারুক বললেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরার পর পাকিস্তান যাব। একটি খসড়া তারিখ আছে। বলেছি আজকের মধ্যেই যেন চূড়ান্ত করা হয়।
বাইরের তিনটি করে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির সিরিজ নিশ্চিত করে দিয়েছেন পিসিবি সভাপতিও, ‘বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই আমরা এই সিরিজ নিয়ে আলোচনা করছিলাম। অচিরেই দুই বোর্ডের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।’ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ব্যর্থতার পর পিসিবি ভবিষ্যৎ ভাবনায় এরই মধ্যে টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো অভিজ্ঞদের ছেঁটে ফেলে সামনে এগোতে চাইছে। মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদ উল্লাহর বিষয়ে একই রকম ভাবনা এখনই ভাবছেন না জানিয়ে ফারুক বললেন, ‘আমার সঙ্গে তাঁদের কথা হয়নি।
সিনিয়র যারা আছে, এটি (অবসরের সিদ্ধান্ত) তাদের দিক থেকেই আসা উচিত। বোর্ড কী করবে, সেটি পরে ঠিক করা হবে। তা ছাড়া আমাদের পরের সাদা বলের সিরিজেরও দেরি আছে, জুলাই-আগস্টে। সময় আছে এটি নিয়ে কথা বলার।’ জাতীয় দলের জন্য কোচ নিয়োগের সিদ্ধান্ত অবশ্য সপ্তাহখানেকের মধ্যেই নিয়ে ফেলতে চান বিসিবি সভাপতি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত ১০০ দিনের চুক্তিতে কাজ করে যাওয়া ফিল সিমন্সকে পেতেই আগ্রহী ফারুক বলছিলেন, “স্থানীয় কোচদের গড়ে তুলতে চাই আমরা। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করেছেন সিমন্সও। এই সপ্তাহেই আলোচনা করব তাঁর সঙ্গে। তবে তাঁর মতো ‘ডেডিকেটেড’ কোচকে এবার আমরা পূর্ণকালীন ভিত্তিতে চাই।”