নাগরপুর প্রতিনিধি: নাগরপুর উপজেলায় চরাঞ্চলে বিষমুক্ত টমেটো চাষে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বর্তমানে বাজারে দাম কম থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। এ অঞ্চলের টমেটো স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও দাম কম পাওয়ায় আমরা হতাশ। উপজেলায় এবার বিভিন্ন জাতের টমেটো চাষ হয়েছে। বিক্রির শুরুতে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হতো। বর্তমানে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছি।
সরেজমিনে জানা যায়, চাষিরা এখন গাছ থেকে টমেটো তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। দাম কম থাকায় তারা হতাশ। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বছর ১৫২ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। গত বছর ১৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল।
কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, ১১৫ শতাংশ জমিতে টমেটো করেছি। বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে গিয়ে ৩০০ টাকা মণ বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে প্রতি মণ ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হতো। উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে টমেটোর দাম কম। সার-বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচও বেশি। এখন পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার টমেটোও বিক্রি হয়নি।
কৃষক রুবেল ইসলাম বলেন, টমেটোগুলো ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রির জন্য রাখা হচ্ছে। কিন্ত ক্রেতা কম থাকায় ঠিকমতো বিক্রি করতে পারছি না। সার ও বীজের বাড়তি দামের কারণে চাষে ক্ষতি হবে। সরকারের সহযোগিতা ও দাম বৃদ্ধির জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্থানীয় কৃষক মো. রবিউল বলেন, এবার সারসহ কামলার দাম বেশি। যার কারণে চলতি মৌসুমে টমেটো আবাদে খরচ বেশি হয়েছে। গ্রামের বেশিরভাগ কৃষকের একই অবস্থা।
গৃহিণী আমেনা বেগম বলেন, এ বছর বাড়ির পাশের প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। বাম্পার ফলন হলেও দাম পাচ্ছি না। দাম কম হলে অনেক লোকসান হবে। তবে আশা করছি সামনে দাম বাড়বে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাছেত মিয়া বলেন, বাজারে কৃষকেরা ৩০ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি করছেন। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলে লাভবান হতেন। আরও ২ মাস টমেটো থাকবে। দাম আরও বেশি হলে তারা লাভবান হতেন।
নাগরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম রাশেদুল হাসান বলেন, উপজেলায় টমেটো চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। নাগরপুরে টমেটোর আবাদ দিন দিন বাড়ছে। টমেটো চাষে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করছি।