নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের বিচার চেয়ে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা গৃহবধূ আজো বিচার পাননি। তিনি স্থানীয় প্রভাবশালীদের হুমকির ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আত্মগোপনে এবং আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা উক্ত নারী গত ৩ ফেব্রুয়ারী, সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় ভুক্তভোগী ওই নারী ডিবি পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে ৩ লাখ টাকা চাঁদার দাবির অভিযোগও তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রুনা খাতুন বলেছিলেন, গত প্রায় এক বছর আগে রং নাম্বারে মাধ্যমে উপজেলার নলুয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফর রহমানের সাথে তার পরিচয় হয়। স্বামীর অবর্তমানে তার ভাড়া বাসায় লুৎফর রহমান গিয়ে গত বছরের ২৭ মার্চ আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সে রাজি না হওয়ায় তাকে জোরপূর্বক মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। লুৎফর রহমান ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে কয়েকটি নগ্ন ছবি তুলে রাখে। লুৎফর রহমান তাকে বিয়ে করার আশ্বাসে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে বিয়ে করতে বলে। কিন্ত সে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এ অবস্থায় সে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। কিন্ত তারপর থেকে লুৎফর রহমান তাকে বিয়ে করার নামে তালবাহানা ও সময়ক্ষেপন করতে থাকে।
তিনি আরো বলেন, গত বছরের ২১ আগস্ট লুৎফর রহমানের আশ্বাসে এবং তার পরিচিত রেহেলা বেগম (৩০)-এর সহায়তায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ১৫৩ নং ডাক্তার কোয়ার্টারে অবস্থান কালে তার কাছ থাকা ১০ লাখ টাকা ও ৫ ভড়ি স্বর্ণালঙ্কার এবং অন্যান্য প্রসাধনী সামগ্রী লুৎফর রহমানের কাছে জমা রাখেন। পরবর্তীতে সেখানেই তাকে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। এ সময় লুৎফর রহমান তার ধর্ষণের ভিডিও ও নগ্ন ছবি সামাজিক তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দেয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ২৮ আগস্ট এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা নগদ ১০ লাখ টাকা ও ৫ ভড়ি স্বর্ণালঙ্কার ও আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে এবং ডাক্তার কোয়ার্টার থেকে তাকে বের করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, সে এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলার পর পুলিশ ডিবি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্ত ডিবি পুলিশের মোতালেব বাসায় তদন্ত করতে গিয়ে তাকে হুমকি দেয়। এসময় তার কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে সে গাড়ি ভাড়ার জন্য ১০ হাজার টাকা দেই। কিন্ত এখন পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। লুৎফর রহমান স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। সে তাকে হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় গোপনে চলাফেরা করছে। সে আর্থিক ও শারিরীক ক্ষতির হাত থেকে মুক্তি, ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা নিয়ে বসবাসের নিশ্চয়তা দাবি করেছে।
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডিবি পুলিশের এসআই মোতাবেল হোসেন জানান, আমি ওই নারীর কাছে টাকা চাইনি। আমি কিছুদিন আগে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে এসেছি। টাঙ্গাইল ডিবি দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, মোতাবেল বদলি হওয়ায় এ মামলাটির তদন্ত অন্য অফিসার করেছেন। তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।