নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে উজান থেকে নেমে আসা ভারতের পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে হু-হু করে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আশঙ্কাজনক হারে পানি বাড়তে থাকায় যমুনা চরাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে, আবারও বন্যার আশঙ্কায় উপজেলার নদীপাড়ের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, গত সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টা থেকে মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর সকাল ৯ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় অর্থাৎ একদিনে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৬৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও ধলেশ্বরী ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ৪২, ফটিকজানি নদীর নলচাপা পয়েন্টে ১০, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ৩ এবং মধুপুর পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। লৌহজং নদীর যুগনী ফটিকজানী নদীর ভূঞাপুর রেগুলেটর পয়েন্টের পরিমাপ মিটার পাউবো সাময়িকভাবে বন্ধ করে রেখেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়- পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতোমধ্যে কিছু কিছু চরের সদ্য রোপন করা গাইনঞ্জা ধানের চারা, বাদাম ও মাশকালাই তলিয়ে যাচ্ছে। চরের ফসলি জমি ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন চরের কৃষকরা।
গাবসারা কালিপুর গ্রামের বাদাম চাষি আলীম, আমির হামজা ও সোবহান মণ্ডল বলেন, মাসখানেক আগে নদীর পানি কমে অসংখ্য ছোট-বড় চর জেগে ওঠে। সেই চরে তারা আগাম জাতের বাদাম ও মাশকলাই রোপণ করেছিলেন। কয়েকদিন ধরে পানি বাড়ায় কিছু কিছু নিচু জমির বাদাম, মাশকলাই ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, সম্প্রতি যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের নদীপাড়ের অসংখ্য বসতভিটা ও ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। যমুনা সেতু রক্ষা গাইড বাঁধের কাছে বালু উত্তোলন ও বাল্কহেডের মাধ্যমে বালু আনলোডের ফলে ভাঙন শিকার হয় নদীপাড়ের মানুষ। তবুও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালু উত্তোলন।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাত হোসেন জানান, জেলার যমুনা নদীসহ সব নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, বন্যার আশঙ্কা নেই। ভূঞাপুরে যারা গাইড বাঁধ ভেঙে ও জিওব্যাগ সরিয়ে বালু লোড-আনলোড করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং ভাঙন আতঙ্ক থাকতেই পারে।