নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সংস্কারের রোডম্যাপ সফল হলে দেরি না করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে হবে। কোনো ব্যর্থ নির্বাচন চাইছি না। আমরা সফল নির্বাচন চাইছি। দেশ আমাদের সবার। কোনো দলের ও ব্যক্তির নয়। এই দেশ ১৮ কোটি মানুষের। তাঁদের স্বার্থে যা করার দরকার সবই করতে হবে।
কক্সবাজারে ডাকাতের হাতে নিহত সেনা কর্মকর্তা তানজিম সারোয়ার নির্জনের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের করের বেতকায় ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ১০টার দিকে যান জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। সেখানে তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতের আমির আরো বলেন, যে ডাকাতদল সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যায় জড়িত, তারা এক মাস আগে কারাগার থেকে জামিনে বের হয়েছে। এরপর তারা বিশাল একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। এ রকম আরও অনেকে কারাগার থেকে জামিন পেয়েছেন। সরকারকে এগুলো দেখতে হবে। এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।
শেখ হাসিনার বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, পালিয়ে যাওয়া কোনো ভালো জিনিস না। উনি চলে যাওয়ার পরে মাঝেমধ্যে টেলিফোনের কথা শুনতে পাই। আমার মনে হয় তিনি এখান থেকে সরে গেছেন, নিশ্চয়ই তিনি উপলব্ধি করেছেন দেশের মানুষ তাঁকে ভালোবাসে না। তিনি আরও বলেন, যেহেতু দেশের মানুষ তাঁকে (শেখ হাসিনা) ভালোবাসে না, জোর করে আবার নিজেকে স্থান করা বুদ্ধিমত্তার কাজ হবে না বলে আমি মনে করি। তিনি যদি অপরাধী হন, কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাঁকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
জামায়াত দুটি রোডম্যাপ চাইছে বলে উল্লেখ করেন ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, রোডম্যাপের একটা সংস্কারের জন্য, অপরটি নির্বাচনের। সেই রোডম্যাপে নির্দিষ্ট হতে হবে কী কী বিষয়ে সংস্কার হবে এবং কত দিনের মধ্যে সংস্কার হবে। সংস্কারের রোডম্যাপ যদি সফল হয়, তাহলে দেরি না করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে হবে। প্রথমটা যদি সফল না হয়, তাহলে দ্বিতীয়টি ব্যর্থ হবে। কোনো ব্যর্থ নির্বাচন চাইছি না। একটা সফল নির্বাচন চাই।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আইন আমরা হাতে তুলে নেব না। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। কে যড়যন্ত্র করছে না-করছে, এটা বড় কথা নয়। জাতি কিন্তু এখন ঐক্যবদ্ধ ও মজবুত।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তিনি আমেরিকায় বলেছেন, এই আন্দোলন ছিল একেবারেই পরিকল্পিত। আমি ওনার বক্তব্যের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবো না। আমি আমার নিজস্ব মূল্যায়নটা শুধু বলবো। সবার প্রতি আমার সম্মান আছে। আমার জানা মতে এই আন্দোলন ছিল ছাত্রদের রাইট ইস্যুর ব্যাপার, অধিকারের ব্যাপার। সেই অধিকারটা অন্য কিছু না।
তানজীমের পরিবারের সঙ্গে তিনি দীর্ঘসময় কথা বলে তার বাবা ছারওয়ার জাহান দেলোয়ার, মা শাহনাজ খান ও বড় বোন তাসনুভা সারোয়ার সূচীকে সাথে নিয়ে দোয়া করেন। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মো. রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামাতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, জেলা সেক্রেটারি হুমায়ুন কবীর, জেলা সহকারী সেক্রেটারি হোসনী মোবারক বাবুলসহ দলের অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে দায়িত্বপালনকালে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন (২৩) নিহত হন।