নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরসহ তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রায় তিন বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ৩৪জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন মামলার দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল ও ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিবিড় পালকে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নামও মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির, মোঃ ছানোয়ার হোসেন ও খান আহমেদ শুভ, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস. এম সিরাজুল হক আলমগীর, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান খান সোহেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাতিনুজ্জামান খান সুখন, জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউর রহমান চঞ্চল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক তানভীর ইসলাম হিমেল ও রনি আহমেদ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নূরুল হক নূরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা টাঙ্গাইলে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর কবরে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। টাঙ্গাইল শহরের সন্তোষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুক্ত মঞ্চের কাছে পৌঁছানোর পর ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিবিড় পালের নেতৃত্বে তাঁদের উপর হামলা করা হয়। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে নূরুল হক নূরের উপর হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে নগদ পাঁচ লাখ ১৩ হাজার টাকা এবং কয়েকটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশের সহায়তায় তারা জীবন নিয়ে ফিরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ঘটনার পর তারা মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ সে সময় মামলা গ্রহণে অসম্মতি জানায়। তাই মামলা দায়েরে বিলম্ব হয় বলে এজাহারে বাদি শাকিল উজ্জামান উল্লেখ করেছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরসহ নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।