নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, যারা ধানমন্ডি ৩২ পুড়িয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে কারা আগুন দিয়েছে তদন্ত করে এর বিচার করতে হবে। সঠিক বিচার না করলে এই সরকারকেও তার জবাবদিহিতা করতে হবে।
শুক্রবার, ৯ আগস্ট রাতে টাঙ্গাইলে নিজ বাসভবন সোনার বাংলায় প্রেস ব্রিফিং করে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি প্রেসব্রিফিংয়ের শুরুতেই আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারী ও দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, বঙ্গবন্ধু এই দেশের সম্পদ, এই দেশের সম্মান। তার প্রতিকৃতি ভাঙার কোনও মানে হয় না। এটা যদি আন্দোলনের পক্ষের লোকেরা দেখে থাকেন তাহলে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে। আর যদি কেউ এর ভেতরে ঢুকে আন্দোলনকে বিপদগামী করার জন্যও করে থাকে তাহলে বর্তমান সরকারকে এদের খুঁজে বের করে এর বিচার করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের সবাই যদি মনে করেন ড. ইউনূস দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকবেন বা উনার ক্ষমতার লালসা আছে, আমি সেটি বিশ্বাস করি না। আমি জানি উনার ক্ষমতার কোনো লালসা নেই। এরপরও উনাকে এক অথবা দুই বছর সময় দিতে হবে দেশটাকে গুছিয়ে তুলতে। মানুষ দুর্নীতিমুক্ত একটা সমাজ ব্যবস্থা চায়। এখানে কতটা বছর ধরে শুধু অন্যায় আর অন্যায় হচ্ছে। এই আন্দোলনটা কোটা আন্দোলনেই এতোটা সফলতা আসে নাই, বৈষম্যের জন্যও আসে নাই, মানুষ ক্ষিপ্ত হয়েছে। তিন-চারটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যেতে পারে নাই। মানুষের ইচ্ছার বাইরে সরকার চলেছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। ১৫ আগস্ট এতোদিন সরকারিভাবে পালিত হয়েছে। এবার কীভাবে পালিত হবে, নাকি পালিত হবে না আমরা এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে জানতে চাই।
আওয়ামী লীগের সংকটময় এই মুহূর্তে যদি আপনাকে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় কী করবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করিনি, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক। বঙ্গবন্ধু আর আওয়ামী লীগ এক নয়। আমি আওয়ামী লীগকে নিয়ে ভাবি না। বঙ্গবন্ধু, দেশ আর মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে ভাবি।
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, এ সময় জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা ঠিক হয়নি। আট বছর আগেইতো তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। হিন্দুদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে হিন্দুদের নির্যাতন, হুমকি ও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। যারা করছেন তাদের হাত গুটিয়ে নেওয়া দরকার, নাহলে হাত জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমি ৬৫-৬৬ সাল থেকে আন্দোলনে জড়িত, এ রকম বিপর্যয়, ধ্বংস আর জীবনহানী এত অল্প সময়ে দেখিনি। এই দেশটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও ১৪ দলের না, দেশটা ১৮ কোটি মানুষের। পুলিশকে থানায় ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করে তিনি বলেন, আইনের নির্দেশ মেনে চলবেন, কোনো দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠির নির্দেশ নয়। সারা দেশ আপনাদের পাশে থাকবে।
এ সময় কৃষক শ্রমিক জনতালীগের জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।