নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে পুলিশের সঙ্গে কোটা বিরোধী ছাত্রদের সাথে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ-সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই বেলা ১১টা থেকে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে বিকেল পর্যন্ত। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে অর্ধশতাধিক টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা নগরজালফৈ এলাকায় পুলিশের একটি গাড়ি, পুলিশবক্স ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। শহর জুড়ে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি তাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে বিকেলে আটক শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
সংঘর্ষ চলাকালে টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেটসহ ইট-পাটকেলের আঘাতে সময় টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন আব্দুর রশিদ, আনন্দ টিভির কালিহাতী প্রতিনিধি মেহেদী হাসান মৃদুল, বিডি নিউজের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি মোল্লা তোফাজ্জল, টাঙ্গাইল টিভির মনিরুজ্জামান মনিরসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ঘোষিত কমপ্লিট সার্টডাউন পালনে ঢাকা টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধের জন্য পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হতে থাকি। এসময় অতর্কিত আমাদের ছত্রভঙ্গ করতে হামলা চালায় পুলিশ। বেপরোয়া লাঠিচার্জ করলে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলি। এসময় আমাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ সময় আমাদের বেশ কয়েকজনকেও আটক করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পুলিশ সদস্য জানায়, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পর পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে। পরে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টাসহ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানোর কারণে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপে ইন্সপেক্টর মোশারফসহ ২০-৩০জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এদিকে, কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির ফলে বিভিন্ন স্থানে অবরোধের ঘটনায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। কিছু কিছু পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও সংখ্যার দিক দিয়ে তা খুবই নগণ্য। সকাল থেকে এ মহাসড়কে দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস কিংবা ব্যক্তিগত কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার গোলাম সবুর সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ জন আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো শিক্ষার্থী বা আন্দোলনকারীদের উপর টিয়ারশেল বা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়নি। তবে সংঘর্ষে বেশ কিছু বহিরাগতদের দেখা যায়। তাদেরকে ফেরাতে টিয়ারশেল-রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়।