নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার অভ্যন্তরীণ নদীর পানি সামান্য বাড়লেও যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি কমেছে।
এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত ৬টি উপজেলার ১২৩ গ্রামের ৫৯ হাজার মানুষ পানিবন্ধি অবস্থায় রয়েছেন। এসব এলাকার চার হাজার ৬০১ হেক্টর ফসলি জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে ২৯ হাজার ৩৩৫ জন কৃষকের ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৫ জুলাই) সকাল নয় পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর (টুকুরিয়া প্রাইমারী স্কুল) পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া, জেলার অভ্যন্তরীণ ফটিকজানি নদীর পানি নলছোপা পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার এবং মধুপুর পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিন টাঙ্গাইল সদরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। নৌকা ও কলা গাছের ভেলা ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। গ্রামগুলোর কৃষকদের ধান, পাট, তিল ও সবজি খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া, গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে আছেন অধিকাংশ বানভাসি মানুষরা।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন জানান, টাঙ্গাইলে বন্যায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- জেলার ২৯ হাজার ৩৩৫ জন কৃষকের ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হচ্ছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।
টাঙ্গাইল জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. ফাহিম হাসান জানান, জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় জিআরের ২০ মেট্রিকটন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুই হাজার করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, নগদ অর্থ ও নৌকা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে- প্রয়োজন হলেই দেওয়া হবে।