গোপালপুর প্রতিনিধি: চলতি বন্যায় গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ও ঝাওয়াইল ইউনিয়নের চার গ্রামের পানিবন্দি মানুষগুলো পানীয় জলের তীব্র সংকটে পড়েছে।
হেমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান হীরা জানান, বন্যা কবলিত গ্রামগুলো হচ্ছে- গুলিপেচা, পশ্চিম শাখারিয়া, চর সোনামুই ও নলিন পশ্চিমপাড়া। কিছু পরিবার ভূঞাপুর-তারাকান্দি যমুনা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্ব পাশের কয়েকটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে।
ঝাওয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, বন্যায় শত শত একর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। চর সোনামুই গ্রামের অধিকাংশ নলকূপ ডুবে যাওয়ায় পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে।
গোপালপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী পানীয় জলের সংকটের সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণের জন্য জ্যারিকেন বা পানি রাখার পাত্র, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং হাইজিন বক্স সরবরাহ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।
গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন খান জানান, পানীয় জল সংকটের কারণে উপদ্রুত এলাকায় যাতে ডায়রিয়াসহ নানা রোগব্যাধি ছড়িয়ে না পড়ে এজন্য একাধিক মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
গোপালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা আখতার জানান, বন্যায় ৫৭ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত এবং ৭ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়েছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে বলে জানান তিনি।
গোপালপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, পাঁচ শতাধিক পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রাথমিক তথ্য দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, গত তিন দিনে পানিবন্দি মানুষের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ উপহারসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চলছে। পানিবন্দিদের ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কে এম গিয়াস উদ্দীন জানান, বন্যাকবলিত জনপদে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ও অবকাঠামোগত সহযোগিতার জন্য উপজেলা পরিষদ কাজ করছে।