নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের পৌর এলাকার বেড়াডোমা লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজ ভেঙে হেলে পড়ার ঘটনায় টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়রসহ ৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে টাঙ্গাইল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে দুর্নীতি দমন কমশিন (দুদক) টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক পত্রে মামলাটি দ্রুত এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় আসামিরা হলেন- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিক্সস অ্যান্ড ব্রিজেজ লি. অ্যান্ড দি নির্মাতা (জেভি) স্বত্ত্বাধিকারী মোস্তফা মোহাম্মদ মাসুদ, প্রকল্প পরিচালক একেএম রশীদ আহমেদ, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহম্মেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব কুমার গুহ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী একেএম জিন্নাতুল হক।
জানা যায়, টাঙ্গাইল পৌর শহরের বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর উপর এলজিইডির অর্থায়নে নির্মাণাধীন এ সেতুটির কাজ বাস্তবায়ন করছে টাঙ্গাইল পৌরসভা। ব্রিজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য আর ৮ মিটার প্রস্থের ব্রিজটি সেতুটি বিগত ২০২০ সালের (১২ নভেম্বর) নির্মান কাজ শুরু হয়।
প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের (১১ মে)। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই বছর (১৬ জুন) রাতে পানির স্রোতে নির্মাণাধীন সেতুর পশ্চিমপাশের বাঁশ ও কাঠের খুঁটিগুলো সরে গিয়ে নির্মাণাধীন সেতুর একাংশ ডেবে যায়। ধারণা করা হয় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা ব্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ডেবে যায়। পরবর্তীতে দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত শুরু করে। অবশেষে অভিযুক্ত মেয়রসহ ৬ জন কর্মকর্তার নামে মামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ হবার আগেই সেতুটি ডেবে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী এলাকাবাসী। তারা বলেন, প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধির বন্ধুবান্ধব এ সেতুর কথিত ঠিকাদার। এরা ঢাকার মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ সেতু নির্মাণে বাধা দিয়েছে। তাদের বাধ্য করে এ সেতুর কাজ বাগিয়ে নিয়েছে। যার ফলে নিম্নমানের জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে এ সেতু নির্মাণে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। জানা যায় তিনি বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন জানান, এ বিষয়ে এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।