নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া বড়মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হওয়ার পর তাকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অব্যাহতির জন্য দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে সুপারিশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। ঈদের আগে ওই সুপারিশ পাঠানো হলেও ১৫ এপ্রিল বিষয়টি জানা যায়।
গোলাম কিবরিয়া বড়মনি টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব এবং টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই।
বড়মনির বিরুদ্ধে ঢাকার তুরাগ থানায় গত ২৯ মার্চ ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন এক নারী। এজন্য দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি গত ৭ এপ্রিল দলের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আযমের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হলেও চিঠির বিষয়টি প্রকাশ পায় সোমবার ১৫ এপ্রিল।
দলীয় সাধারণ সম্পাদককে দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের হওয়ার পর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে দলীয় ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ কারণে টাঙ্গাইলের সাধারণ জনগণ দলের প্রতি বিরুপ ধারণা পোষণ করছে। এমতাবস্থায় টাঙ্গাইল জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের পরামর্শ ও নির্দেশক্রমে দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং সুনাম ও ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য গোলাম কিবরিয়া বড়মনিকে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হলো এবং চূড়ান্ত অব্যাহতি প্রদানের জন্য আপনার নিকট সুপারিশ করা হলো।
এদিকে ঢাকায় ধর্ষণ মামলা দায়েরের পরদিন থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন বড়মনি। জেলার কোনো অনুষ্ঠানে বা দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায়নি।
টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ বলেন, ঈদের আগে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে গোলাম কিবরিয়াকে চূড়ান্ত অব্যাহতি প্রদানের জন্য সুপারিশ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদকের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, বড়মনির বিরুদ্ধে গত বছর এপ্রিলে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযোগ করেন যে ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। পরে ওই নারী একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন। আদালতের নির্দেশে ওই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতে বলা হয়, ওই সন্তানের জৈবিক পিতা গোলাম কিবরিয়া নন। এর কয়েক মাস পর ওই নারী আত্মহত্যা করেন।
এদিকে বড়মনির জানিয়েছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার ও তাদের পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য তার বিরুদ্ধে এই ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে।