মির্জাপুর প্রতিনিধি: ‘বিএনপির ভাইয়েরা যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিতে না চান তাহলে আর কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নেই। কারণ এখানে আমাদের আওয়ামী লীগেরই দু'জন প্রার্থী। আমরা ভোট দিয়ে যাকে মনোনীত করব তিনিই এমপি হবেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে প্রতীক দিয়েছেন উনিই যদি এমপি হন তাহলে আমরা অনেক কাজ করতে পারব।’
গত রোববার, ১০ ডিসেম্বর মির্জাপুর উপজেলার হাটফতেপুর উত্তরপাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদের ওয়াজ মাহফিলে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া এসব কথা বলেন।
তার ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় বিএনপি ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, বিএনপি কিন্তু নির্বাচনে আসেনি, খালি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে এসেছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী খান আহমেদ শুভ, আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী (মীর এনায়েত হোসেন মন্টু) দাঁড়িয়েছেন, তার অবস্থান আপনারা জানেন, তিনি অসুস্থ মানুষ। তিনি হঠাৎ করে উদ্যোগ নিয়েছেন।
জানা যায়, আব্দুর রউফ মিয়া ২০১৭ সালে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ওই বছরের ২০ আগস্ট একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রয়াত এমপি মোঃ একাব্বর হোসেনের হাতে ফুলের নৌকা তুলে দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
পরে ২০২১ সালে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনের সময় সরকারবিরোধী বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
এ বিষয়ে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে লোক আছে। আমি তো এমপির পক্ষে (আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ) নির্বাচন করছি। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে (উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন মন্টু) নির্বাচন করছে তারা আমার বক্তব্য কেটে কেটে ছেড়ে দিয়েছে।
ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ লিটন বলেন, নির্বাচনে যে কোনো ভোটার ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে পারেন। বিএনপিকে ভোট দিতে কেন্দ্রে না আসার ব্যাপারে মন্তব্য করা ইউপি সভাপতির ঠিক হয়নি।
প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে ফের নির্বাচন করছেন। আর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন প্রার্থী। তবে আওয়ামী লীগের এ দুজনের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।