ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইলে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর নেশা ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা 'শয়তানের নিঃশ্বাস' এই নেশা প্রয়োগ করে ফ্লেক্সিলোডের দোকান থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর বিকাল ৪টার দিকে ঘাটাইল উপজেলার বটতলী বাজারে আনোয়ার ফোন ফ্যাক্স এর দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায় ২ প্রতারক। সে ঐ এলাকার বাজার সংলগ্ন বাড়ির নুর মোহাম্মদ এর ছেলে।
ভুক্তভোগী আনোয়ার জানান, ৩০ হাজার টাকা একজনকে দেওয়ার জন্য দোকানে এনে রেখেছি। কিছুক্ষণ পর একটি সাদা প্রাইভেট কার থামে দোকানের সামনে এবং সেটি থেকে নেমে আসে মুখে মাস্ক পড়া সুন্দর উঁচা লম্বা দাড়িওয়ালা একজন লোক। তিনি এসে ২০ টাকা দামের ৫টি মিনিট কার্ড চায় এবং ১শ’ টাকা দিয়ে ৫টা মিনিট কার্ড নেয়।
এ সময় প্রাইভেট কার থেকে জিন্স প্যান্ট পরা একটি মেয়ে নেমে এসে টেবিলের সামনে দাঁড়ায়। এরপর দুইটা ৫শ’ টাকার নোট দেখিয়ে আরবি ভাষায় কি কি বলে, আমি বুঝতে না পারায় তারা আমাকে ১ হাজার টাকার একটি লাল নোট দেখায়।
আমি ৫শ’ টাকার নোট দুইটি হাতে নেওয়ার পর পরই কেমন যেন হয়ে যাই। এরপর তারা আমার ড্রয়ার থেকে তারা নিজের হাতে ৩০ হাজার টাকা বের করে ড্রয়ার লাগিয়ে দিয়ে দ্রুত চলে যায়। তিনি সবকিছু দেখেও কিছু বলতে পারেন নাই বলে তিনি জানান।
বাজারের মুদি দোকাদার নাসির বলেন, আনোয়ার দৌড়াইয়া আইছে, বলতেছে নাসির ভাই গাড়ি ঘুড়াও। পরে আমি গাড়ি ঘুড়াইছি। রাস্তায় কিছু দূরে যাইয়া কইছে, আমার টাকা নিয়ে গেছে বিকাশের। পোড়াবাড়ি পর্যন্ত গেছিলাম পাই নাই। দু'এক জনকে জিজ্ঞেস করলেও বলতে পারল না গাড়িটা কোন দিকে গেছে ।
আনোয়ার আরও বলে, ৩০ হাজার টাকা কেবল বাড়ি থেকে আইনা দোকানে রাখছি। রাখার পরমুহূর্তেই দুইটা লোক আইসা আরবিতে কথা বলছে, ও আবার ইংলিশে উত্তর দিছে।
এ প্রসঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান রাসায়নিক কর্মকর্তা দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, নতুন এ আতঙ্কের নাম ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস, যা একধরনের ভয়ংকর হেলুসিনেটিক ড্রাগ। স্কোপোলামিন নামে একধরনের মাদক দিয়ে বশ করা হয় টার্গেট ব্যক্তিকে। এটি হেলুসিনেটিক ড্রাগ। ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি কাছাকাছি গেলেই নিশ্বাসে ওটি টেনে নিয়ে যাবে। আর সেটি যার শরীরে প্রবেশ করানো হয় ১২ মিনিটের মধ্যে অ্যাকশন শুরু হয়ে যাবে তার। রিমোট কন্ট্রাল দিয়ে যেমন টেলিভিশন স্ক্রিন নিয়ন্ত্রণ করা যায়; তেমনি আপনি যা বলবেন যার নাকে শুকানো হয়েছে তিনি তাই করবেন। মূলত ওই ব্যক্তি তখন তাদের কথামতো চলবে।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, যখন দোকানদার টাকার নোট দুইটা হাতে নেয়, এরপর সে তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় এবং এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে। লিখিত কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।