সখীপুর প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, ‘এভাবে দেশ চলতে পারে না, আমি এই দেশ চাই নাই। আমি সেই দেশ চেয়েছি, যে দেশে একজন সাধারণ মানুষের সন্তানও নিরাপদে থাকবে, রাজা-বাদশার মতো মানুষের মাথার ওপরে পা দিয়ে কেউ যেতে পারবে না।’
আজ মঙ্গলবার সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিহত শিশুর সহপাঠী ও পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি কী করব। বঙ্গবন্ধুকে যারা খুন করেছে, এখন তারা আমার বোনের পেছনে, কী করার আছে আমার। এ জন্য কিছু করতে পারি না, কিন্তু তাই বলে আমার এলাকায় রাস্তাঘাটে শিশুকে মেরে ফেলবে, আর পুলিশ এভাবে ভুঁড়ি ভাসিয়ে হাঁটবে, তাহলে তাদের দরকার কী।’ এ সময় তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ পুলিশকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে বলেন, ‘আমি এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
পুলিশের সমালোচনা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুটির বাবা পুলিশকে চারজনের নাম বলেছেন, অথচ ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি তারা। এই রকম গা ভাসানো পেটে চর্বিযুক্ত পুলিশ দিয়ে কী হবে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় সবাই যখন পালিয়ে গিয়েছিল, তখন আমার ২৫ বছর বয়সে মনে হয়েছিল, যদি মা-বোনের ইজ্জত রক্ষা করতে না পারি, মানুষকে নিরাপত্তা দিতে না পারি; তাহলে বেঁচে থাকার চাইতে মরে যাওয়া অনেক ভালো। আমি সে জন্য যুদ্ধ করেছি, কিন্তু যুদ্ধের পরে দেখেছি, ওই সময় যারা পালিয়ে গিয়েছিল, ভয়ে নদীতে হাবুডুবু খেয়েছে, এখন আমার চাইতে তাদেরই দাম বেশি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনি আমার চাইতে পাঁচ মাসের ছোট, তারপরও আমি তাঁকে মায়ের মতো মনে করি। আর আমার মা কোনো রাস্তাঘাটের মানুষ নন। মায়ের প্রতি আমার সম্মানবোধ অনেক বেশি।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের স্থানীয় নেতা সানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বীরপ্রতীক, সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব, নিহত শিশু সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা আশিক জাহাঙ্গীর, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়াকে (৯) অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। ওই দিনই তারা পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে শিশুর বাবার মুঠোফোনে অডিও বার্তা পাঠায়। দুই দিন পর শুক্রবার বাড়ির কাছে ঝোপঝাড়ের মধ্যে শিশুটির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর মামলা হলেও পুলিশ গত ৬ দিনেও কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি।