কালিহাতী প্রতিনিধি: কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মালতী গ্রামের রাস্তা নিয়ে পাশ্ববর্তী আট হাজারেরও বেশি মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিগত ১০ বছরেও এ রাস্তার সংস্কার না হওয়ায় এলাকাবাসী সরকারের কাছে দ্রুত নতুন পাকা সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতিই তাদের এ অসুবিধার জন্য দায়ি। সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে গেছে। দুই পাশে ভেঙে গিয়ে খানাখন্দে ভরা রাস্তায় ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে যাতায়াত করা যায় না। ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকরা গাড়ি অন্য জায়গায় রেখে বাড়ি যান। বৃষ্টি হলে রাস্তার মাঝের গর্তে হাঁটু পানি জমে যায়। তখন পায়ে হেঁটে চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়ে। যাতায়াতের অসুবিধার কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগী কম হয়।
কালীহাতী উপজেলার অন্যতম বড় গ্রাম মালতী গ্রামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি মাদরাসা, একটি বাজার, একটি বড় মসজিদ, ঈদগাঁহ মাঠ ও কবরস্থান। মালতীর উত্তরপাশের ব্রিজ থেকে দক্ষিণ দিকে গ্রামের ভেতরে চলে যাওয়া প্রধান রাস্তাটি দৈর্ঘ্যে প্রায় তিন কিলোমিটার। এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার মানুষ চলাচল করে। পাশের গ্রাম ঘড়িয়া, নরদহি, ভাউয়াল, দেউপুর ও নগরবাড়ীর অনেকেই প্রতিনিয়তই যাতায়াত করেন।
মালতী গ্রামের শাহ আলম মিয়া বলেন, লজ্জার কথা কি বলবো? ঈদের পরদিন আমার কিছু আত্মীয়-স্বজন আসেন। রাস্তার দুরাবস্থার কারণে আমি তাদেরকে আমার বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি নাই। পরে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাই।
ভ্যানচালক রহিজ উদ্দিন বলেন, 'রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। খাইলা ভ্যানগাড়ি টাইনা নিতে অয়।'
একজন নারী পথচারী বলেন, 'ভ্যান চলে না। তাই হাঁইটাই যাইতাছি। গর্ভবতী মহিলাদের যাতায়াতে যে কি কষ্ট হয়, সেটা বইলা বোঝানো যাবো না।'
মিজানুর রহমান মিঞ্জু বলেন, আমরা গ্রামবাসীরা চরম ভোগান্তিতে আছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের যুগে এ ধরনের রাস্তা কোথাও আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই।
মালতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন জাহান বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে বেশ অসুবিধা হয়। বৃষ্টি হলে ছেলে-মেয়েরা পা পিছলে পড়ে ব্যথাও পায়। এখানে দ্রুত নতুন পাকা রাস্তা করা দরকার।
নারান্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। যাতে জনস্বার্থে এখানে অল্পসময়ে নতুন রাস্তা নির্মাণ হয়।
নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহর আলী বলেন, আমার গাড়ি নিয়ে বাড়িতে যেতে পারি না। ফলে বাধ্য হয়েই প্রতিনিয়ত হেঁটে বাড়িতে যাই।
টাঙ্গাইল এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে কালিহাতীর মালতী গ্রামের এ রাস্তার কাজের অনুমোদন পেলে দ্রতই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।