সময়তরঙ্গ ডেস্ক : বর্ষায় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বেড়ে যায় । এডিস মশাবাহিত ভাইরাসজনিত জ্বর হলো ডেঙ্গু । এ ভাইরাসের চারটি স্ট্রেইন( ডেন- ১, ২, ৩ ও ডেন- ৪) । এর যে কোনো একটি দিয়ে ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে । আর এ ভাইরাস বহন করে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস প্রজাতির মশা ।
বর্ষায় এডিস ইজিপ্ট মশা বংশবিস্তার করে । বিশেষ করে ঘরের ভেতরে বা চারপাশের জলাবদ্ধ পানিতে এই মশা বংশবিস্তার করে । এডিস ইজিপ্ট মশা ডেঙ্গু বিস্তারে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভূমিকা রাখে । এ মশার একটি কামড়ই ডেঙ্গু সংক্রমণের জন্য যথেষ্ট ।
বর্ষা শুরু হতেই বেড়ে যায় মশার উপদ্রব । এর ফলে দ্রুত বাড়তে থাকে ডেঙ্গুর প্রকোপ । ডেঙ্গুর উপসর্গ হলো- জ্বর, পেশি ব্যথা, শরীর ব্যথা, দুর্বলতা ইত্যাদি । সব মিলিয়ে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ নয় ।
তাই বর্ষার শুরু থেকেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন থাকুন কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে- মশা সবার আগে মানুষের শরীরের হাত আর পা টার্গেট করে । কারণ হাত- পা খোলা থাকে সবারই । তই বর্ষার মৌসুমে হাতাওয়ালা পোশাক পরুন । চেষ্টা করুন শরীর কাপড়ে আবৃত রাখার । ফুল প্যান্ট, ফুলহাতা শার্ট, জুতা ইত্যাদি দিয়ে শরীর ঢেকে রাখতে হবে ।
ঘর বা বাড়ির আশেপাশে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করুন । মশার বংশবিস্তারের আদর্শ স্থান হল জমে থাকা পানি । বৃষ্টির কারণে এ সময় জলাবদ্ধতা বাড়ে, ফলে মশার বংশবিস্তারের স্থানও বাড়ে । তাই ফুলের টব থেকে শুরু করে ড্রেন ইত্যাদিতে যেন পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন ।
মশা তাড়ানোর একটি কার্যকর এবং স্বাস্থ্যকর উপায় হলো মশা দূরে রাখে এমন গাছ ঘরে রাখা । তুলসি, সিট্রোনেলা, লেমনগ্রাস ইত্যাদি ঘরে মশা আসতে দেয় না । ময়লা রাখার পাত্র পরিষ্কপার করুন প্রতিদিন । ব্যবহারের সময় ময়লার পাত্রের মুখ ঢেকে রাখতে হবে । এছাড়াও ঘরের কোণা, ছায়াবৃত স্থান, বাগান ইত্যাদিও নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে ।
মশা তাড়ানোর ওষুধ মশা তাড়ানোর স্প্রে, মলম ইত্যাদি ব্যবহারে জোর দিতে হবে । ঘরে কিংবা বাইরে সবখানেই এগুলো ব্যবহার করা উচিত । বিশেষ করে, শিশুদের ক্ষেত্রে এগুলো অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত ।
বর্ষার মৌসুমে দরজা- জানালা বন্ধ রাখতে হবে । আর জানালা খোলা রাখলেও নেট দিয়ে রাখতে ভুলবেন না । বিকেল থেকেই মশার উপদ্রব বাড়তে থাকে । তাই এ সময় ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখলে মশা ঢুকতে পারবে কম ।
মশা দূরে রাখতে মৃদু কর্পূর, সরিষার তেলের সঙ্গে মেশানো ক্যারোম সিড বা আজওয়াই ইত্যাদি ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে কাজে লাগান । নিমের ও ল্যাভেন্ডার তেল, ইউক্যালিপ্টাস অয়েল ইত্যাদিও উপকারী ।
বর্ষায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে । এজন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার বিকল্প নেই । কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে, সব ধরনের রোগ থেকে নিস্তার পাবেন ।
পানির পর্যাপ্ত পরিমাণ: ডেঙ্গুর সময় শরীরের পানি সংরক্ষণ করতে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন যাতে দেহের সাথে পানি সঠিকভাবে পৌঁছে।
বৃষ্টির পানি সংজাতন: ঘরের চারপাশে বৃষ্টির পানি জমাতে দিন না। ডেঙ্গু মস্তিষ্কতে বসে যাতে ঘরে পানি জমানো সম্ভাবনা থাকে।
মশার নিয়ন্ত্রণ: মশা ডেঙ্গুর সম্প্রসারণের মুখ্য উপযুক্ত এবং বাঁচার স্থান। মশা সংক্রান্ত কার্যক্রম অনুসরণ করুন, যেমন মশার নেট ব্যবহার করুন, মশার ছটা পরিধান করুন এবং উপযুক্ত মশার নিয়ন্ত্রণ করার উপায় ব্যবহার করুন।
আপনার ঘরের নানা স্থানে পানি জমানো যাবেনা: ঘরের বাইরে আছে নানা ধরণের পানি জমানোর স্থান যাতে মশা প্রতিস্থানে জমা হতে না পারে।
পরিস্থিতি বিশেষজ্ঞ সেবা: ডেঙ্গু সম্পর্কে জানতে এবং প্রতিস্থানে সেবা পেতে স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে যান।
মাশার ছটা পরিধান: বাড়ির বাইরে বের হতে যাওয়ার আগে উপযুক্ত ছটা পরিধান করে বের হতে চেষ্টা করুন।
জরুরি স্থিতিতে চিকিৎসা: ডেঙ্গুর লক্ষণগুলি অভিজ্ঞ করলে তা জরুরি চিকিৎসা করতে যান।