ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুরে পুলিশ পরিচয়ে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূলহোতাসহ তিন যুবক গ্রেপ্তার হয়েছে। এ সময় তাদের সঙ্গী আরো ৭-৮জন পালিয়ে যায়।
সোমবার, ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে উপজেলার চরাঞ্চল গাবসারা ইউনিয়নের পুংলিপাড়া ঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আহত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন উপজেলার পুংলিপাড়া গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ছিনতাইকারীর মূলহোতা উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খুপিপাড়া গ্রামের কায়সার মিয়া (২২), ভূঞাপুর পৌরসভার ছাব্বিশা এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে রাকিব মিয়া (২৫), একই পৌরসভার ফসলান্দি এলাকার সিফাত মিয়া (১৯)।
স্থানীয়রা জানান, কায়সার মিয়া গোবিন্দাসী বাজারে স্বর্ণের দোকানের পাশাপাশি মাদকের ব্যবসা করতো। উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার ১০-১১জন মাদকসেবীদের নিয়ে পুংলি এলাকায় মাদক সেবন শেষে রাতের বেলায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে একজন কাপড় ব্যবসায়ীর পথরোধ করে। পরে তারা ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করার পর মুক্তিপণের জন্য ১০ লাখ টাকা দাবী করে। পরে নগদ টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা লেনদেন হওয়ার পর ব্যবসায়ীকে পাট ক্ষেতে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে ছিনতাইকারীরা সেখান নৌকাযোগে গোবিন্দাসী ঘাটে আসে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের ধরতে ধাওয়া করলে ৭-৮জন পালিয়ে গেলেও ঘটনার মূলহোতাসহ ৩ জনকে আটক করে থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
জানা গেছে, কাপড় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে পূর্বে একটি মাদক মামলা থাকার বিষয়টি ছিনতাইকারীর মূলহোতা আরেক মাদক ব্যবসায়ী কায়সার মিয়া জানতো। এই সুযোগে কায়সার মাদকসেবীদের নিয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে আটক করে মুক্তিপণ দাবী করে।
কাপড় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, চট্টগ্রামে কাপড় ব্যবসা ভাল না হওয়ায় বাড়িতে চলে আসি। পুংলিপাড়া ঘাট থেকে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় তারা আমাকে ধরে ফেলে এবং পুলিশ পরিচয় দেয়। এসময় আমাকে তারা এলোপাথারি মারধর করতে থাকে। পরে মুক্তিপন হিসেবে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। পরে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা দেয়ার পর তারা একটি পাট ক্ষেতে আমাকে ফেলে রেখে যায়। পরে বিষয়টি আত্মীয় স্বজনদের জানালে তারা গোবিন্দাসী ঘাট এলাকার স্থানীয়দের সহায়তায় তিনজনকে আটক করে। এ সময় বাকিরা পালিয়ে যায়।
ভূঞাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুম্মন খান জানান, খবর পেয়ে এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, পুলিশ পরিচয়ে তারা ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করার পর মুক্তিপণ হিসেবে টাকা দাবী করে। এই ঘটনায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।