নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে ডা. আখতার জাহানের ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের অভিযোগ, গাইনী ডা. আখতার জাহান অতিরিক্ত টাকার লোভে প্রসূতিকে সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ না করে তার আছিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসবের চেষ্টা করেন। এতে রোগির অবস্থা খারাপ হলে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজার করান ডাক্তার। এরপর প্রসবের পর শিশুরটির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ডাক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করেন স্বজনরা।
জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার উত্তর হুগড়া গ্রামের আবুল হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম রোববার ডা. আখতার জাহানের কাছে যান। যেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে আগামী ১০ আগস্ট সন্তান প্রসবের তারিখ দেন তিনি।
আবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, যখন আমার স্ত্রীকে ডা. আখতার জাহানকে দেখানো হয় তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। তার গর্ভের সন্তান সুস্থ ছিলেন। এরপর আখতার জাহান টাকার লোভে কৌশলে আমার স্ত্রীকে তার আছিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। রোববার রাত ১২ টায় স্যালাইনের সাথে প্রসব ব্যথা উঠার ইনজেকশন দেন তিনি।
রাত ১২ টার আর আমার স্ত্রীর প্রসব ব্যথা উঠলে তিনি তার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসব করানোর চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ২টায় আমার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ না করে তিনি টাকার লোভে মা ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানের সিজারের মাধ্যমে ছেলে শিশু প্রসব করা হয়। শিশুর অবস্থার অবনতি হলে তাকে বুরো হেলথ কেয়ারে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে শিশুটির মৃত্যু হয়। মঙ্গলবারই প্রসূতিকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হয়।
আবুল হোসেন আরও বলেন, তিনি যতক্ষণে অবসের ডাক্তারকে ফোন দেয়া ও বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে এসেছেন ততক্ষণে তিনি সরকারি ক্লিনিকে প্রেরণ করতে পারতেন। সে টাকার লোভে সরকারি হাসপাতালে না পাঠিয়ে আমার স্ত্রীকে তার ব্যক্তিগত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। ডাক্তারের কারণে আমার ছেলে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আমি ডাক্তারের শাস্তি কামনা করি।
আবুল হোসেনের বাবা আব্দুল গফুর বলেন, ডাক্তার আমার পুত্রবধূকে সেবা না দিয়ে বাণিজ্যের চিন্তা করেছে। আগে দেখতাম সিজারের চার থেকে পাঁচ দিন পর রোগিকে ছাড়পত্র দেয়। কিন্তু এই ডা. আখতার জাহান ডাক্তার দুই দিনেই আমার পুত্রবধূকে ছাড়পত্র দিয়েছে। ডাক্তারের কারণে আমার নাতিকে হারালাম। আমি ডাক্তারের শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে ডা. আখতার জাহান বলেন, এখানে দায়িত্বে কোন অবহেলা করা হয়নি। রোগিকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবু ছালাম মিয়া বলেন, শিশুর পরিবারের সদস্যরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাদের আমি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। তারা লিখিত অভিযোগ করলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।