বাসাইল প্রতিনিধি: বাসাইল পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আব্দুর রহিম আহমেদের বড় চিন্তার বিষয় দলীয় কোন্দলের পাশাপাশি মোকাবিলা করতে হবে দুই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীকে। তাঁরা হলেন উপজেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি এনামুল করিম অটল ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের উপজেলা শাখার সভাপতি রাহাত হাসান টিপু। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এবার আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ‘কঠিন পরীক্ষা’ দিতে হবে।
পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তিন মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ভরে গেছে রাস্তা-গলি। সব জায়গায় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে। কলিয়া গ্রামের হাসান সিকদার বলেন, পুরো পৌর এলাকায় উৎসবের আমেজ। নির্বাচনী প্রচারণা চলছে জোরেশোরে। মেয়র পদে তিনজন শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় প্রচারণা জমে উঠেছে।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, বাসাইল পৌরসভা ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালে। সে নির্বাচনে মেয়র হন মোঃ মজিবুর রহমান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আব্দুর রহিম আহমেদ মেয়র নির্বাচিত হন। আব্দুর রহিম দলের উপজেলা শাখার সহসভাপতি। এবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।
আব্দুর রহিম আহমেদ টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের এমপি)র অনুসারী। বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগে রয়েছে কোন্দল। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী অলিদ ইসলামের নেতৃত্বে বড় একটি অংশ রয়েছে সংসদ সদস্যের বিপক্ষে। এই কোন্দলের প্রভাব ‘আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে’ পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির একাধিক নেতা।
তবে দলীয় কোন্দলের প্রভাব নির্বাচনে পড়বে না বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রহিম আহমেদ। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর পৌরসভায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাই দলের সব স্তরের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ ভোটাররা তাঁর সঙ্গে আছেন। ফলে জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
এদিকে বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এনামুল করিম অটলকে গত শুক্রবার দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। নির্বাচনে তাঁর প্রতীক নারকেলগাছ। তাঁর কর্মীরা বলছেন, দলের পদধারী নেতারা প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন না। তবে তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন।
এনামুল করিম অটল বলেন, উপজেলা বিএনপির সব নেতা-কর্মী তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তারপরও খুব সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এবার ৭০ ভাগ ভোটার তাঁর পক্ষে রয়েছেন। সাধারণ জনগণ ভোট দিতে পারলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।
স্থানীয় লোকজন বলেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে নির্বাচন করেন। ফলে দলটির উপজেলা শাখার সভাপতি ও গামছা প্রতীকের প্রার্থী রাহাত হাসান টিপু এবারের পৌর নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। দলের শীর্ষ নেতারা তাঁর প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
রাহাত হাসান টিপু বলেন, গত নির্বাচনে (২০১৮ সালে) সামান্য ভোটে হেরেছিলাম। ১০ বছর ধরে মাঠে রয়েছি। বাসাইলের জনগণ আমাকে চায়। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমার বিজয় নিশ্চিত।
আগামী ২১ জুন বাসাইল পৌরসভার ভোট গ্রহণ হবে। এখন অপেক্ষা কে হবেন এ পৌরসভার মেয়র; তা দেখার অপেক্ষা।