নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে ধান কাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন। এর মাধ্যমে শ্রমিক সংকটের নিরসন হওয়ায় কৃষকরা খানিকটা সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও বাড়ছে তাদের। সিন্ডিকেটের কারণে গত বছরের তুলনায় হারভেস্টার মেশিনে বেড়েছে ধান কাটার মজুরি। বর্তমানে শতাংশ প্রতি ৪০-৫০ টাকা মজুরি বেশি গুনছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, গত বছর কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে শতাংশ প্রতি জমির বোরো ধান কাটতে নেওয়া হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। এ বছর শতাংশ প্রতি দাম বাড়িয়ে ১০০-১১০ টাকা করা হয়েছে। যদিও মেশিন মালিকদের দাবি, তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধান কাটার মজুরি বাড়াতে হয়েছে তাদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের বিল ঘারিন্দা, গালা ইউনিয়নের কান্দিলা, সদুল্যাপুর এলাকার কৃষকরা কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটছেন।
কৃষকরা জানায়, গত বছর কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটায় অনেক সাশ্রয় হয়েছে। কিন্তু এবার বিঘা প্রতি এক হাজার টাকা বেশি খরচ হওয়ায় সাশ্রয় হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সদর উপজেলার বিল ঘারিন্দা, পয়লা, কান্দিলা এলাকার কৃষক তামিম হাসান, শান্ত মিয়া, কেরামত আলী, বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের দাপনাজোর গ্রামের ফয়সাল আহমেদ, জমির আলী, ওয়ারেছ মিঞাসহ অনেকেই জানান, গত বছর ধান কাটার জন্য বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন আনা হত। কিন্তু এবার এলাকাভিত্তিক হারভেস্টার মেশিন ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বাইরের কোনও মেশিন দিয়ে ধান কাটা যাবে না। আর এই সুযোগে ধান কাটার মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছেন মেশিন মালিকরা। কৃষকরাও বাধ্য হয়ে বেশি মজুরি দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, টাঙ্গাইল জেলায় কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন মালিক সমিতি নামে একটি সংগঠন গড়ে উঠেছে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. মনির সিকদার শতাংশ প্রতি ধান কাটার দাম বাড়িয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের মালিক মো. মনির সিকদার জানান, জেলায় হারভেস্টার মেশিন মালিক সমিতি নামে কোনও সংগঠন গঠিত হয়নি। একটি মহল রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আহসানুল বাসার জানান, ইতোমধ্যে জেলায় এক লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। তারা কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন কিনতে কৃষকদেরকে সরকার থেকে সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। সাধারণত যে উপজেলার জন্য মেশিনটি কেনা হয়- সেই উপজেলায় ধান কাটার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়। এর বাইরে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ধান কাটার বিষয়ে কোন মূল্য নির্ধারণ বা হস্তক্ষেপ করে না।