নাগরপুর প্রতিনিধি: নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা ইউনিয়নের আগ দিঘুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আরিফ হোসেন-সুমাইয়া দম্পতির কোল আলোকিত করে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে যমজ পুত্র সন্তান। তবে শিশু দুটি স্বাভাবিক নয়, বুকে জোড়া লাগানো। গত শনিবার, ৬ মে রাতে টাঙ্গাইল শহরের রাজধানী নার্সিং হোম-এ সিজারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম দেন সুমাইয়া আক্তার।
জোড়া লাগানো যমজ শিশুর সু-চিকিৎসার সাহায্যের আবেদন নবজাতক যমজ শিশুর পিতা আরিফ হোসেন বলেন, ৬ তারিখ টাঙ্গাইলের রাজধানী নার্সিং হোম-এ আমার স্ত্রীর যমজ শিশু হয়। তাদের নাম রাখা হয়েছে হাসেন-হোসেন। তাদের বুক একে অপরের সাথে জোড়া লাগানো। ক্লিনিকে নিবির পর্যবেক্ষণ না থাকায় টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ৯ তারিখ বাসায় নিয়ে আসি। বাচ্চা দুটি এখন সুস্থ্য। বিকল্প পদ্ধতিতে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে। স্ত্রী সুমাইয়াও সুস্থ্য আছেন।আরিফ হোসেন বলেন, আমার বাবা ঘোড়ার গাড়ি চালক। আমি পেশায় দিনমুজর। আমাদের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল না। ক্লিনিক থেকে বলেছে অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করা সম্ভব। কিন্তু এই চিকিৎসার ব্যয় বহন করা আমার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। শিশু দুটিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বিত্তবানসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
মা সুমাইয়া আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সন্তান দুজনকে আলাদা শরীরে দেখতে চাই। চিকিৎসা সহায়তার মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে চাই। আমার সামর্থ নেই চিকিৎসা করানোর। তাই সরকারের কাছে সকল প্রকার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এদিকে জোড়া লাগানো যজম শিশু দুটি দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে প্রতিবেশিসহ আশপাশে কয়েক গ্রামের মানুষ।
আরিফ হোসেনের বোন জামাই মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ডেলিভারির আগেও আল্ট্রাসনোতে বাচ্চা যমজ জানতে পারলেও জোড়া লাগানোর বিষয়টি জানা যায়নি। জন্মের পর দেখা যায় তাদের শরীর জোড়া লাগানো। চিকিৎসকরা জানান, ক্লিনিকে জোড়া লাগানো যমজ শিশু দুটিকে আলাদা করা সম্ভব নয়। তারা ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অর্থ না থাকায় বাধ্য হয়ে শিশুদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান। বর্তমানে শিশু দুটি নিয়ে নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলে আগ দিঘুলিয়া গ্রামে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন।
তিনি জানান, শরীর জোড়া লাগানো থাকলেও খাবার ও পস্রাব-পায়খানার রাস্তা তাদের আলাদা। যত্নের সাথে তাদের লালন-পালন করছেন মা সুমাইয়াসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। জোড়া লাগানো সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। এখন কোন সমস্য না হলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের সমস্যটা বড় হতে থাকবে। এই জটিল চিকিৎসার ব্যয়ভার আর অস্ত্রোপচারের জটিলতা নিয়ে পরিবারে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দ্রুত সু-চিকিৎসার মাধ্যমে শিশু দুটিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান সরকারসহ বিত্তবানদের প্রতি।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট (গাইনী) ডা. লিংকু রাণী কর জানান, চিকিৎসা শাস্ত্রে এটিকে কনজয়েনড টুইন বেবি বা সংযুক্ত যমজ শিশু বলা হয়। এটি অবশ্যই জটিল একটি চিকিৎসা। অস্ত্রোপচার করা গেলে সফলতা সম্ভব। দেশে জোড়া লাগানো বেশ কয়েকটি শিশুর অস্ত্রোপচার হয়েছে।
নবজাতক শিশু দুটির সু-চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা পাঠানোর ঠিকানা: নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা ইউনিয়নের আগ দিঘুলিয়া গ্রাম। নবজাতক শিশু দুটির মাতা সুমাইয়া আক্তার। বিকাশ নম্বর: ০১৩১৪৬৯৮৯০৩