সময়তরঙ্গ ডেস্ক : দেশে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রান্তিক পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সব জনগোষ্ঠীকে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার আওতায় আনার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘উচ্চ রক্তচাপজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ এবং মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে কার্যকরী এবং ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে।
এ সময় কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের সহসভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) আওতাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব। তবে কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রশিক্ষিত লোকবল নিশ্চিত এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান জানান, ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি মোটিভেশন প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান উদ্যোগগুলো সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে এই সঙ্কট থেকে দ্রুত উত্তরণ সম্ভব হবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৩০ ভাগই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পায় না এবং প্রায় ২০০ কোটি মানুষ ভয়াবহ স্বাস্থ্য ব্যয়ের মুখোমুখি হয়। তবে তথ্য-উপাত্ত বলছে, এক্ষেত্রে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (পিএইচসি) ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা সবচেয়ে কার্যকরী এবং ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপ হসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের প্রমুখ।