নিজস্ব প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার ১২ দিন পর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তার ছোট ভাই সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির।
আজ সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছোট মনির অভিযোগ করেন, টাঙ্গাইলের একটি স্বার্থান্বেষী মহল মাদকাসক্ত এক কিশোরীকে ব্যবহার করে তাই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা সাজিয়েছে। মামলার পর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলায় ধর্ষণের যে দিন তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে তার সাড়ে তিন মাস আগে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা গেছে।
সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোটমনির বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যার পর টাঙ্গাইলের একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী পরিবার টাঙ্গাইল থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের পর আমরা টাঙ্গাইলকে সন্ত্রাসমুক্ত করার আন্দোলন শুরু করি। এ আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে। আর এ বিষয়টি আমাদের জন্য কাল হয়েছে। তারা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনে ভুঞাপুর-গোপালপুর থেকে দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর থেকেই একটি পরিবার আমাদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তারাও বড় মনির বিরুদ্ধে করা মামলায় নেপথ্যে রয়েছে। সব মিলিয়ে টাঙ্গাইলে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে আবারও একটি খুনের শহরে পরিণত করতে চায় ষড়যন্ত্রকারীরা।
৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে এক কিশোরী (১৭)। মামলায় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় ওই কিশোরী অভিযোগ করে, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির তার আত্মীয় ও পূর্বপরিচিত। গত ১৭ ডিসেম্বর তাকে শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি ভবনে বড় মনির ডেকে নেন। সেখানে তিনি তাকে ধর্ষণ করেন ও আপত্তিকর ছবি তুলে রাখেন। পরে আপত্তিকর ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে ওই কিশোরী মামলায় অভিযোগ করে। একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি বড় মনির জানার পর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে কিশোরী রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ তাকে শহরের আদালত পাড়ায় বড় মনিরের শ্বশুড়বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে ওই কিশোরীকে বড় মনির আবার ধর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র সাহা, সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ তারেক, সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এলেন মল্লিক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক বীর প্রতীক, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মানিক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান প্রমুখ।