বাসাইলের সা‌বেক ইউএনওর আত্মসমর্পণ, শুনা‌নি ১৩ মার্চ

আইন আদালত বাসাইল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক‌লেজছাত্রীর করা মামলায় বাসাইল উপজেলার সা‌বেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেন নিম্ন আদাল‌তে আত্মসমর্পণ ক‌রে‌ স্থায়ী জা‌মিনের আবেদন ক‌রে‌ছেন। উচ্চ আদা‌লত থে‌কে আগাম ৬ সপ্তা‌হের জা‌মিনের মেয়াদ শেষ না হওয়ায় আদাল‌তের বিচারক শেখ আবদুল আহাদ আগামী ১৩ মার্চ জা‌মি‌নের শুনা‌নির দিন ধার্য ক‌রেছেন।

সোমবার (৬ মার্চ) মনজুর হোসেন তার আইনজীবীর মাধ‌্যমে টাঙ্গাইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ ক‌রেন। মনজুর হোসেন রাজবাড়ীর পাংশা থানার চরঝিকড়ী গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওএসডি হিসেবে সংযুক্ত আছেন।

গত বছরের জুনে মনজুর হোসেনের বিরু‌দ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে মামলা দা‌য়ের ক‌রেন মির্জাপু‌রের এক ক‌লেজছাত্রী। প‌রে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৩ জানুয়ারি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আমলি আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা সুলতানা তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

ওই ক‌লেজছাত্রী ব‌লেন, ইউএনও তার আইনজী‌বীর মাধ‌্যমে আদাল‌তে স্থায়ী জা‌মি‌নের আবেদন ক‌রেন। মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার‌ণে অসুস্থ‌তা দে‌খি‌য়ে তি‌নি উচ্চ আদালত থে‌কে আগাম ৬ সপ্তা‌হের জা‌মিন পান। এতে তার জা‌মি‌নের শেষ তা‌রি‌খে ১৩ মার্চ। জা‌মি‌নের মেয়াদ শেষ না হওয়ায় নিম্ন আদাল‌তের বিচারক তার জা‌মি‌নের শুনা‌নি ১৩ মার্চ ধার্য ক‌রেন। প‌রে তি‌নি আদালত ত‌্যাগ ক‌রে ঢাকায় চ‌লে যান।

কলেজছাত্রীর আইনজীবী মো. রাসেল রানা জানান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর মনজুর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন আবেদন করেন। উচ্চ আদালত থেকে মনজুর হোসেনকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। সোমবার তি‌নি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ ক‌রেন।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান বলেন, ওই ইউএনও ছয় সপ্তাহের জন্য উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আগামী ১৩ মার্চ পর্যন্ত তার জামিনের মেয়াদ রয়েছে। ত‌বে আজ তিনি টাঙ্গাইলে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া জামিনের মেয়াদ থাকায় আগামী ১৩ মার্চ এ জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারক। পরে তিনি চলে গেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মনজুর হোসেন ২০২১ সালে বাসাইলে ইউএনও হিসেবে কর্মরত থাকার সময় ফেসবুকের মাধ্যমে মির্জাপুরের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মনজুর হোসেন বিভিন্ন সময় ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তাকে নিয়ে ভারতে বেড়াতে যান। টাঙ্গাইল শহরে বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা একত্রে কয়েক মাস বসবাসও করেন। পরে ওই কলেজছাত্রী বিয়ের জন্য চাপ দিলে মনজুর হোসেন তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২১ জুন ওই কলেজছাত্রী আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৪৯৩ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *