ভূঞাপুর প্রতিনিধি: আবহমান গ্রাম-বাংলার হারানো ঐতিহ্যকে ফেরাতে ও বর্তমান প্রজন্মের সামনে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবকে তুলে ধরতে বসন্ত বরণ ও বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে গোপালপুরে ঘুড়ি উৎসব ও আনন্দ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে উপজেলার নলিন বাজারের পাশে যমুনার ধূ-ধূ বালুচরে মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী 'আমরা গোপালপুরবাসী ফেসবুক গ্রুপ' ও শুভশক্তি বাংলাদেশের সহযোগিতায় ঘুড়ি উৎসব পালিত হয়।
এই ঘুড়ি উৎসবে নানা শ্রেণি পেশার মানুষসহ স্কুল পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী নানা রঙয়ের, নানা বর্ণের রঙিন ঘুড়ি নিয়ে বালুময় চরে বিকাল বেলা সমবেত হয়। পরে একে একে ঘুড়ি উড়ানো ও ঘুড়ির সুতা কাটাকাটি খেলা শুরু হয়। পরে বাউল গানে আড্ডায় মেতে ওঠে বিনোদন প্রেমিরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক বছর ধরে আমাদের স্কুল থেকে বসন্ত বরণ ও চরাঞ্চলে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করছে আসছে। আমরা কয়েক দিন ধরে নানা রঙয়ের বিভিন্ন ঘুড়ি তৈরি করেছি। নদীর পাড়ে বিকাল বেলা এমন উৎসবে অনেক আমাদের অনেক সহপাঠিরা তাদের মা-বাবা নিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।
ঘুড়ি উৎসবে অংশ নেয়া স্কুল শিক্ষিকা আঁখি বলেন, কর্ম ব্যবস্ততার কারণে যমুনা চরাঞ্চলে আসার সুযোগ হয় না। বসন্ত বরণ উপলক্ষে গতবারের ন্যায় এবারো ময়না আপার ডাকে ঘুড়ি উৎসব উদযাপনে পরিবার নিয়ে অংশ গ্রহণ করেছি। চরাঞ্চলের এমন উৎসবে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জু আনোয়ারা ময়না বলেন, ২০১৯ সাল থেকে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে বসন্ত বরণকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি উৎসব পালন করে আসছি। বিগত বছরের তুলনায় এবছর লোকজনের উপস্থিত বেড়েছে। প্রতিবছরই এমন ঘুড়ি উৎসব উদযাপন করা হবে।
গোপালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ছোটবেলায় আমি নিজেও ঘুড়ি উড়িয়েছি, এটিতে আলাদা একটি আনন্দ আছে। আমি মনে করি বাঙালির এই ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতির যে একটা অতীত সম্বৃদ্ধির অতীতকে স্মরণ করে থাকে। এটি একটি বিশুদ্ধ প্রতিযোগিতা।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসলাম হোসাইন বলেন, বর্ণিল এই রঙিন ঘুড়ি উৎসব কখনো দেখার সুযোগ হয়নি। দীর্ঘদিন পর এ ঘুড়ি উৎসবে প্রাণ ফিরেছে সেই শৈশবে। ফ্লাগুনের এই প্রথম দিনে বর্ণিল রঙিন রঙের ছটায় ঘুড়ি হাতে নিয়ে নীল আকাশে উড়িয়েছে। উৎসবে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত।