নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী সাহিত্য মেলা- ২০২২ এর শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে, বাংলা একাডেমির সমন্বয়ে ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে এ সাহিত্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব (যুগ্মসচিব) এ.এইচ.এম লোকমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, বিশিষ্ট কবি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল খান মাহবুব, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট জাফর আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ওলিউজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাহিত্যিকের সার্থক মেলবন্ধন, আত্মিক সমন্বয়ের গভীরতর প্রকাশ-প্রণয়। কবিধাম টাঙ্গাইলে কবিতার জয়-স্বপ্নকবির সম্ভাবনার নিরঙ্কুশ বিজয়। নবচিন্তার নবকর্মে শাণিত হয়েছে সাহিত্যের সত্য-সাহসিক রসধারা, সমৃদ্ধ হয়েছে কালের লক্ষ্যজয়ী উজ্জয়িনী নবতর ইতিহাস।
আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ষাট দশকের অন্যতম কবি, বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল খান মাহবুবকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সাহিত্য মেলার দ্বিতীয়পর্বে ‘টাঙ্গাইল জেলার সাহিত্য সংস্কৃতি’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক খান মাহবুব। প্রবন্ধে তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের ভৌগোলিক অবস্থা এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে এখানকার উন্নত সাহিত্য সংস্কৃতি অন্যতম অনুসঙ্গ। সাহিত্য ও সংস্কৃতির পাশাপাশি জেলার শিক্ষার মানও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধেও টাঙ্গাইলে অনেক অবদান রয়েছেন। পাকিস্তান শাসনামলে টাঙ্গাইল সাহিত্য সংস্কৃতির আন্দোলনের ব্যাপক অবস্থান ছিল। ৬০ ও ৭০ এর দশকের শিল্প সংস্কৃতির যে চর্চা হয়েছে তা পরবর্তী সময়ে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, টাঙ্গাইলের শাড়ি ও মিষ্টি সাহিত্য সংস্কৃতির বড় একটি অংশ। সাহিত্যে জেলার বড় একটি অবদান রয়েছে। শালবনের সৌন্দর্যমাখা এ জেলাটি কেবল ভূ-প্রকৃতি কিংবা গৌরবদীপ্ত রাজনৈতিক ইতিহাসের জন্যই নয়, শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি এবং শিক্ষায় এ জেলাটির ভূমিকা অনন্য এবং ঈর্ষণীয়। কেবল কবিতা বা গল্প নয় নাটকেও টাঙ্গাইলের অবদান জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃত।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্রবন্ধ পাঠ, আলোচনা সভা ও লেখক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব (যুগ্মসচিব) এ. এইচ. এম লোকমান ও টাঙ্গাইল সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি মাহমুদ কামাল।
পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের সাহিত্য মেলা সমাপ্ত হয়। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো কবিদের মিলনমেলা বসবে।